একযুগ পর আবারও চট্টগ্রাম-বরিশাল নৌপথে জাহাজ চলাচল শুরু

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল | 2023-08-31 20:50:48

বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্ভাবনাময় বরিশালের নৌরুটে নিরবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ, পর্যটনশিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ঘটাতেই জাহাজ চলাচলের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি)।

এতে করে পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজারের সঙ্গে কুয়াকাটার একটি নিবিড় যোগাযোগ স্থাপিত হবে । ১৪/১৫ ঘণ্টার এই যোগাযোগ ব্যবস্থায় ভ্রমণ পিপাসুদের ভ্রমণে নতুনদ্বার উন্মোচিত হবে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম-বরিশাল নৌপথে পরীক্ষামূলক জাহাজ চলাচল শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম সদরঘাট থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে পরীক্ষামূলকভাবে যাত্রা শুরু করে বিআইডব্লিউটিসির নতুন জাহাজ এমভি তাজউদ্দিন আহমদ। বরিশাল স্টিমার ঘাটে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে সেই জাহাজ এসে পৌঁছায়। এবং রাত সাড়ে ৯টায় বরিশাল থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে বলে বার্তা২৪.কম-কে নিশ্চিত করেছেন বিআইডব্লিউটিসির বরিশালের ব্যবস্থাপক জসিম উদ্দিন শিকদার ।

বরিশাল বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে চট্টগ্রাম-বরিশাল নৌরুটে প্রথম জাহাজ চলাচল শুরু করেছিলো কর্তৃপক্ষ। ওই সময়ে চারটি জাহাজ চলাচল করলেও ১০ বছরের মাথায় ১৯৭৪ সালের দিকে চলাচলকারী জাহাজ এমভি তাজুল ইসলাম এবং পরবর্তী সময়ে এমভি আলাউদ্দিন আহম্মেদকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে বিক্রি করে দেয় নৌপরিবহন করপোরেশন । কিন্তু ২০০৯ সালে মেরামতের কথা বলে এমভি মতিন ও এমভি মনিরুল হককে ডকইয়ার্ডে তোলার পর গুরুত্বপূর্ণ এই নৌপথে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

বন্ধের দীর্ঘ একযুগ পর আবারও চট্টগ্রাম- বরিশাল নৌরুটে এমভি বার আউলিয়া ও এমভি তাজউদ্দীন নামে দুটি জাহাজ চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয় বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।

জানা গেছে, এমভি বার আউলিয়া ও এমভি তাজউদ্দীন আহমদ জাহাজ দুটি ১২ নটিক্যাল মাইল গতিতে চলার সক্ষমতা রয়েছে। পাশাপাশি জাহাজ দুটির তৃতীয় ও দ্বিতীয় শ্রেণির ব্যবস্থাসহ প্রতিটি জাহাজে ২৫টি কেবিনসহ ৭৫০টি আসন রয়েছে।

বরিশাল সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শাহ সাজেদা বলেন, চট্টগ্রাম-বরিশাল নৌরুটে জাহাজ সার্ভিসের সঙ্গে নদীবিধৌত বরিশাল অঞ্চলবাসীর আশা–আকাঙ্ক্ষা ও অনেক স্মৃতি জড়িত। ষাটের দশকে এই রুটে এবং অন্যান্য রুটে সরকারি সংস্থার জাহাজ চলাচলে কারণে বরিশাল প্রসিদ্ধ নৌবন্দরে পরিণত হয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, এই জাহাজ চালুর মধ্য দিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি পর্যটনকেন্দ্র কক্সবাজারের সঙ্গে কুয়াকাটার একটি নিবিড় যোগাযোগ স্থাপিত হবে।

বরিশাল চেম্বার অব কর্মাসের সভাপতি মো. সাইদুর রহমান রিন্টু বলেন, চট্টগ্রাম থেকে বরিশালে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন করতে পারলে সময় ও আর্থিক সাশ্রয় হবে। এতে দুই বিভাগের পর্যটন, ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগের ক্ষেত্রে অভূতপূর্ব উন্নতি ঘটবে। কেননা, চট্টগ্রাম থেকে বরিশালে পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে একসময় এই নৌ সেবাই ছিল একমাত্র ভরসা। ২০০৯ সালে এটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে তাঁরা দুর্ভোগে আছেন। সড়কপথে পণ্য আনা-নেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক জটিলতায় পড়তে হয়।

বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্য) এস এম আশিকুজ্জামান বার্তা২৪.কম-কে জানান, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর আবারও চট্টগ্রাম-বরিশাল নৌরুটে জাহাজ চলাচলের সিদ্ধান্ত নেয় বিআইডব্লিউটিসি। বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম থেকে বরিশালের উদ্দেশ্যে এমভি তাজউদ্দীন আহমদ নামে জাহাজটি ট্রায়াল শুরু করেছে। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) রাতে জাহাজটি আবার চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা দিবে।

পর্যায়ক্রমে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার মধ্য দিয়ে এই রুটে আনুষ্ঠানিক জাহাজ যাত্রা কার্যক্রম শুরু হবে। তবে এখনো ভাড়া নির্ধারণ ও সপ্তাহে কত দিন এই সেবা দেওয়া হবে, তার সময়সীমা নির্ধারণ হয়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর