নৌ-যান ও বন্দরে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

, জাতীয়

তরিকুল ইসলাম সুমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ঢাকা | 2023-08-30 00:11:23

বিশ্বব্যাপী চলছে করোনার তৃতীয় ঢেউ। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা । কিন্তু ঢাকা কেন্দ্রীক মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কিছুটা প্রবনতা দেখা গেলেও মফশ্বল এলাকায় মানার লক্ষণ দেখা যায়না। বিশেষ করে যারা শহরমুখী তাদের মধ্যে করোনা প্রতিরোধে নেই তেমন কোনো উদ্যোগ। দক্ষিণাঞ্চল থেকে যারা মাওয়া, কাওড়াকান্তি, শিমুলিয়া, শরিয়তপুর যাতায়াতের জন্য নৌ বন্দর ও নৌ-যান ব্যবহার করেন, তাদের ৯৫ শতাংশই মাস্ক বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেন না। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও নেই কোন সচেতনতামূলক উদ্যোগ বা কার্যক্রম।


যাত্রীবাহী নৌ-যান মালিক সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান রিন্টু বার্তা২৪.কমকে বলেন, করোনা প্রতিরোধে সরকারি বিধিনিষেধ মানার জন্য আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সকল মালিকদের বলা হয়েছে। তবে সকল মালিক যেমন এক রকম নয় তেমনি সকল যাত্রীও সমান নয়। প্রশাসনিক ভাবেও এ বিষয়ে একটু নজর দেওয়া প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, আমাদের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল মালিককে তাদের নৌ-যানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহণ করা, মাস্ক ব্যবহার ছাড়া নৌ-যানে উঠা নিষেধ করা হয়েছে। যারা মানছেন না তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান এবং সংস্থার পরিচালক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, করোনার এই সময়ে আমরা সকল যাত্রীবাহী নৌ-যানে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছি। পাশাপাশি শুধু ঢাকা সদরঘাট নৌ বন্দর নয়, দেশের সকল নৌ বন্দর এলাকায় মাইকিং, মাস্ক বিতরণসহ সচেতনতার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সামাজিক দুরত্ব মেনে চলার জন্যও বলা হয়েছে।

ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান আরও বলেন, যেসব নৌ-যান মালিক বা কর্মকর্তা এই কাজে গাফলতি করবেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএর ঘাট পরিদর্কদের এ বিষয়ে নতুন করে নির্দেশনা দেওয়া হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী ঢাকা শহরে সংক্রমণের হার ২৮-৩০ শতাংশ। সংক্রমণের দিক দিয়ে ঢাকার পর আছে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, রংপুর, ময়মনসিংহ ও বরিশাল।


অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম বলেন, ওমিক্রনের নতুন যে ভ্যারিয়েন্টটি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে এসেছে। এটি দ্রুত সংক্রমিত হচ্ছে। আগের তুলনায় বেশি সংক্রামক হতে পারে। বেশি সংক্রামক হলে ক্ষতি করার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়। কাজেই আমাদের আত্মতুষ্টির কোনও সুযোগ নেই। রোগীর সংখ্যা কোনভাবেই যাতে না বাড়ে সে জন্য আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ দায়িত্বপূর্ণ আচরণ করতে হবে।

সরকারের পাবলিক হেলথ অ্যাডভাইজারি কমিটির সদস্য ও জ্যেষ্ঠ জনস্বাস্থ্যবিদ ডা. আবু জামিল ফয়সাল বলেন, আমাদের চলাচল নিয়ন্ত্রিত করার পাশপাশি মাস্ক পরতে হবে। বিশেষ করে গণপরিবহণ (বাস, ট্রেন, নৌ-যান)গুলোতে স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা। প্রয়োজনে স্থানীয় প্রতিনিধি এবং প্রশাসন সচেতনতামূলক কাজ করবে। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনকে এটা তদারকি করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি পালন না করলে করোনা সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না।

মাওয়া কাওড়াকান্দি নৌ বন্দরের পরিদর্ক মো আখতার হোসেন জানান, আমারা আমাদের বন্দর এলাকায় জনসচেতনতার জন্য কাজ করছি। মাইকিং করা হচ্ছে। নৌ-যানে অধিকযাত্রী পরিবহণ না করার জন্য বলা হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর