নারায়ণগঞ্জ নগরীতে ছুরিকাঘাতে মো. মাহফুজ (২০) নামের এক কলেজছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (১১ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টায় নগরীর টানবাজার ঘাট এলাকায় ছুরিকাহত হন তিনি। পরে রাত আড়াইটায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্বজন ও পুলিশের সাথে কথা বলে জানা যায়, পূর্ব শত্রুতার জেরে মাহফুজকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। নিহত মাহফুজ নগরীর খানপুর বউবাজার এলাকার হারুনুর রশীদের ছেলে। নারায়ণগঞ্জ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল মাহফুজ। পাশাপাশি কুমুদিনী ওয়েলফেয়ার ট্রাস্টের কারখানায় অপারেটর হিসেবে চাকরি করতো।
শনিবার (১২ মার্চ) দুপুরে সুরতহাল শেষে মাহফুজের মরদেহ নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। প্রাথমিক তদন্ত ও নিহতের দুই সহকর্মীর দেওয়া তথ্যের বরাতে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আজিজুল হক বলেন, বছর দেড়ের পূর্বে দেওভোগের কিছু যুবকের সাথে চাষাঢ়ায় শহীদ মিনারের সামনে মারামারি হয় মাহফুজ, মেহেদী, সায়েম ও তাদের বন্ধুদের। কোনোভাবে তারা জানতে পারে দেওভোগের ওই যুবকরা পিকনিক শেষে রাতে টানবাজার ঘাট দিয়ে ফিরবে। তাদের সাথে ঝামেলা করার উদ্দেশ্যে টানবাজারে যায় তারা। সেখানেই প্রতিপক্ষের মারধর ও ছুরিকাঘাতে গুরুতর আহত হয় মাহফুজ। ঘটনার তদন্তে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
থানা ফটকে মাহফুজের বড় বোন পলি বেগম বলেন, বিকেলে কাজ থেকে ফেরার পর দুই সহকর্মী ও বন্ধু মেহেদী (২১) ও সায়েম (২০) বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায় মাহফুজকে। রাতে মাহফুজ ছুরিকাহত অবস্থায় নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে আছেন বলে খবর পান বড় বোন পলি। হাসপাতালে গেলে চিকিৎসক দ্রুত ঢাকা নিয়ে যেতে বলে। পরে ঢাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করালে সেখানে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) ছিল মাহফুজ। রাত আড়াইটার দিকে আইসিইউতেই মারা যায় সে।
মাহফুজের পিঠে গভীর ছুরির আঘাত ছিল বলে জানান তার মা মাবিয়া বেগম। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মেসে রান্না কইরা খাওয়াইয়া ছেলেরে বড় করছি। তিন মেয়ের পর একমাত্র ছেলে ছিল মাহফুজ। ক্ষোভের সুরে ছেলে হত্যার বিচার চান মা।
এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মেহেদী, সায়েম ছাড়াও তমাল (২২) নামে আরেক সহকর্মীকে থানায় রেখেছে পুলিশ। মেহেদী মৃত মো. জাহাঙ্গীরের ছেলে এবং সায়েম দুবাই প্রবাসী মো. নয়নের ছেলে। তমালের সম্পূর্ণ পরিচয় জানা যায়নি। তারা তিনজনই খানপুর ও আশেপাশের এলাকার বাসিন্দা। মেহেদীর স্ত্রী স্মৃতি বলেন, শুক্রবার দুপুরে বের হন তার স্বামী। এরপর কী হয়েছে তা তারা জানেন না। মেহেদী ও নিহত মাহফুজ ভালো বন্ধু ছিল বলেও জানায় স্মৃতি। একই কথা জানান সায়েমের স্বজনরাও।