১০ বছরে মংলা ইপিজেডে রফতানি বেড়েছে ১৬ গুণ

খুলনা, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 11:26:43

বাগেরহাটের মংলা ইপিজেডে গত ১০ বছরে রফতানি ১৬ গুণ ও বিনিয়োগ বেড়েছে ১১ গুণ। আর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার মানুষের। বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (বেপজা) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বেপজা’র মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) নাজমা বিনতে আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী সিদ্ধান্তে ১৯৯৮ সালে ২৮৯ একর জমির ওপর মংলা ইপিজেড গড়ে তোলা হয়। আর গত ১০ বছরে এ ইপিজেড’র আমূল পরিবর্তন হয়েছে।

ইপিজেড’র কারণেই মংলা বন্দর সচল হয়েছে। ইপিজেড’র ১৯২টি শিল্প প্লটের মধ্যে ১৬৫টি বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এখানে ১২৮টি কারখানা বর্তমানে চালু আছে।১৫টি কারখানা চালু হওয়ার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ইপিজেডে বর্তমানে সাড়ে ৪ হাজার নারী-পুরুষ কর্মরত আছেন। ২০০৮ সালে মংলা ইপিজেডে বিনিয়োগ হয়েছিল ৪৫ কোটি টাকা, আর ২০১৮ সালে বিনিয়োগ হয়েছে ৫১০ কোটি টাকা।’

তিনি আরও বলেন, ‘গত ১০ বছরে ইপিজেড-এ বিনিয়োগ বেড়েছে ১১ গুণ। ২০০৮ সালে ইপিজেড থেকে রপ্তানি হয়েছিল ২৯৫ কোটি টাকার পণ্য। আর ২০১৮ সালে হয়েছে ৪ হাজার ৭০৫ কোটি টাকা। ফলে রপ্তানি বেড়েছে ১৬ গুণ। আগে মংলা এলাকার অর্থনীতি ছিল কৃষি (ধান) ও মাছ নির্ভর।

এখন ওয়ার্কাররা টয়োটা গাড়ীর হিটিং প্যাড, ভিআইপি লাগেজ ব্যাগ, নর্থ আমেরিকার টাওয়েল, ফ্যাশন উইক, পাটজাত পণ্য,সুপারি পণ্য, মার্বেল পাথর সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত। এসব পণ্য ভারত, চীন জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, থাইল্যান্ড,ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, নেদারল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে।’

খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মংলা-রামপালের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, ‘২০০১ সাল বিএনপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইপিজেড ও বন্দর অচল হয়ে যায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনার নির্দেশে আবারো ইপিজেড এবং বন্দর সচল হয়। এখন ৪/৫ হাজার নারী শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে এ ইপিজেডে। এই অঞ্চলের জন্য ইপিজেড অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে।’

মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তা ট্রাফিক ম্যানেজার মো. সোহাগ বলেন, ‘মংলা ইপিজেড স্থাপন করা হয়েছিল মংলা বন্দর সচল করার জন্যই। মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ’র কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করে ইপিজেড প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানে ইপিজেডে খালি প্লট খুবই কম। ইপিজেডে ব্যাপক শিল্পায়ন হয়েছে। কাঁচামাল মংলা বন্দর দিয়ে আনা-নেয়া হচ্ছে। এর ফলে মংলা বন্দরের ব্যবহার বেড়েছে।’

মংলা বন্দর ব্যবহারকারী এইচ এম দুলাল বলেন, ‘ইপিজেডে হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ইপিজেড়ের কারণে মংলা বন্দরসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন হচ্ছে।’

মংলা ইপিজেডে কর্মরত নারী শ্রমিক রাবেয়া বেগম বলেন, ‘আগে সংসার চালাতে খুব কষ্ট হতো। স্বামীর আয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া চালানো যেতো না। এখন আমি ইপিজেডে কাজ করি, ১০ হাজার টাকা বেতন পাই। আমার এবং স্বামীর দুইজনের আয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া-জামা-কাপড় এবং দৈনন্দিন বাজারের সব খরচ পূরণ করতে পারছি।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর