গৃহকর্মীর ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’র মামলায় গ্রেফতার হওয়া ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক ও তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারের জামিন ও রিমান্ড আবেদন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের ৩ দিনের মধ্যে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৭ জানুয়ারি) বিকালে শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন মো. সুলতান সোহাগ উদ্দিনের আদালত এই আদেশ দেন।
এর আগে, দুপুর সোয়া ৩টার দিকে তাদের ঢাকার সিএমএম আদালতে আনা হয়। এ সময় আশফাকুল হকের হাতে হ্যান্ডকাপ লাগানো ছিল। এজলাসে প্রবেশের সময় তার হ্যান্ডকাপ খুলে দেওয়া হয়।
আসামিদের ৫ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ উপপরিদর্শক নাজমুল হাসান। অপরদিকে আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন বাতিল ও জামিনের আবেদন করেন তাদের আইনজীবী চৈতন্য হালদার ও আশরাফুল আলম।
শুনানি শেষে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুল হকের আদালত আসামিদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন না মঞ্জুর করে ৩ দিনের মধ্যে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়ে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে, বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে গৃহকর্মী প্রীতি উড়ানের (১৫) ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’র অভিযোগে ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক (৬৫), তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকার (৪৭) নামে মামলা দায়ের করে গৃহকর্মীর বাবা লুকেশ উড়াং। পরে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাদের আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মাহফুজুল হক ভূঞা বলেন, অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগে ৩০৪/ক ধরায় মামলা নেওয়া হয়েছে। মামলার বাদী গৃহকর্মীর বাবা লুকেশ উড়াং। আসামিদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আবাসিক ভবনের নবম তলা থেকে পড়ে এক কিশোরী গৃহকর্মীর মৃত্যু হয়। প্রীতি উরাং নামের ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরী ওই ভবনের বাসিন্দা ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় কাজ করতেন। তার বাড়ি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিত্তিঙ্গা গ্রামে, বাবার নাম লোকেশ উরাং।
মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সে সময় স্থানীয়রা ওই বাড়ির ফটকে জড়ো হয়ে ‘মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে’ অভিযোগ করে বিক্ষোভ শুরু করে।
পরে পুলিশ সৈয়দ আশফাকুল হক, তার স্ত্রী তানিয়া হকসহ ওই বাসা থেকে ছয়জনকে থানায় নিয়ে যায়।
একে পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি করেন স্থানীয়রা। একই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি জানান তারা।