গৃহকর্মীর অবহেলাজনিত মৃত্যু: ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা
গৃহকর্মীর ‘অবহেলাজনিত মৃত্যু’র অভিযোগে ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক (৬৫), তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকার (৪৭) নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তাদের আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হক, তার স্ত্রী তানিয়া খন্দকারের বিরুদ্ধে মামলাটির দায়ের করেন গৃহকর্মী প্রীতির বাবা লুকেশ উড়াং।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মাহফুজুল হক ভূঞা।
ওসি বলেন, অবহেলা জনিত মৃত্যুর অভিযোগে ৩০৪/ক ধরায় মামলা নেওয়া হয়েছে। মামলার বাদি গৃহকর্মীর বাবা লুকেশ উড়াং। আসামিদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
- ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদকের ফাঁসির দাবি স্থানীয়দের
- গৃহকর্মী হত্যার অভিযোগে ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক আটক
- ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদকের ফ্ল্যাট থেকে পড়ে গৃহকর্মীর মৃত্যু
এর আগে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে আবাসিক ভবনের নবম তলা থেকে পড়ে এক কিশোরী গৃহকর্মীর মৃত্যু হয়। প্রীতি উরাং নামের ১৫ বছর বয়সী ওই কিশোরী ওই ভবনের বাসিন্দা ডেইলি স্টারের নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আশফাকুল হকের বাসায় কাজ করতেন। তার বাড়ি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মিত্তিঙ্গা গ্রামে, বাবার নাম লোকেশ উরাং।
মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে খবর পেয়ে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ মেয়েটির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। সে সময় স্থানীয়রা ওই বাড়ির ফটকে জড়ো হয়ে ‘মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে’ অভিযোগ করে বিক্ষোভ শুরু করে।
পরে পুলিশ সৈয়দ আশফাকুল হক, তার স্ত্রী তানিয়া হকসহ ওই বাসা থেকে ছয়জনকে থানায় নিয়ে যায়।
একে পরিকল্পিত হত্যা বলে দাবি করেন স্থানীয়রা। একই ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তার জন্য অভিযুক্তের ফাঁসির দাবি জানান তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা সালমান হোসেন বলেন, আজকে সকালে রাস্তায় বের হয়ে দেখি অনেক মানুষ জড়ো হয়ে আছে। সামনে গিয়ে দেখি একজন কাজের মেয়ের লাশ পড়ে আছে। পরে তাকে রিকশায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাই। এই ঘটনা শুধু আজকে নয়, এর আগেও একই বাসা থেকে আরেকজন কাজের মেয়েকে ফেলে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। তখন এলাকাবাসী সেই মেয়েকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
ওই এলাকার এক খাবারের দোকানের বিক্রেতা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ওই বাসায় আগেও এরকম ঘটনা ঘটছিল। এক বাসায় বারবার কিভাবে এমন ঘটনা ঘটে। শাস্তি না হওয়ার কারণে এরা এমন ঘটনা বার বার ঘটায়। বিচার হওয়া উচিত।
গত বছরের ৬ আগস্টও একই ধরনের ঘটনা ঘটে আশফাকুল হকের বাসার। সেবার ৯ বছরের এক শিশু গৃহকর্মী লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহত হয়। ওই ঘটনায় নির্যাতনের অভিযোগ এনে আশফাকুল হক, তার স্ত্রী তানিয়া হক ও শিল্পী নামের আরেক নারীকে আসামি করে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন শিশুটির মা। সেই মামলা এখনও চলছে।