প্রবল শক্তি নিয়ে উপকূল অতিক্রম করছে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। উপকূলে চালিয়েছে ব্যাপক তাণ্ডব। ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসকে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই। কেউ কেউ বলছেন গত ৫০ বছরে এমন জলোচ্ছ্বাস দেখেননি। উপকূলীয় জেলার অনেকে লিখেছেন তাদের ঘরে পানি প্রবেশ করেছে, যা তাদের জীবদ্দশায় কখনও ঘটেনি।
সারাদেশ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় রিমালে এখন পর্যন্ত ১০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। খুলনা, সাতক্ষীরা, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা ও চট্টগ্রামে এসম মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও খুলনা, সাতক্ষীরা ও পটুয়াখালী জেলাসহ উপকূলীয় ১৯ জেলার ১০৭ উপজেলার ৯১৪ ইউনিয়ন ও পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান জানিয়েছেন। প্রবল ঘূর্ণিঝড় রিমালে ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৩৫ হাজার ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত ও আংশিক ক্ষতি হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ৯ শত ঘরবাড়ি। তবে সরকারের প্রস্তুতির কারণে বড় ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের ৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা সহযোগিতার জন্য দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি জেলায় ৩ কোটি ৮৫ লাখ নগদ টাকা। পাঁচ হাজার পাঁচশত মেট্রিক টন চাল ও পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার। এছাড়া শিশু খাদ্য কেনার জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা সহযোগিতা করা হয়েছে। এসব সহযোগিতা ক্ষতিগ্রস্তের মোবাইল অ্যাকাউন্টে যাবে। বরাদ্দ অব্যাহত থাকবে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী।
মহিবুর রহমান জানান, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাসমূহে ৯ হাজার ৪২৪টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে বা স্থায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৮ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, রোববার (২৬ মে) রাত আটটার দিকে মোংলার দক্ষিণ-পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে ঘূর্ণিঝড় রিমাল। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, বরগুনাসহ উপকূলের বিভিন্ন জেলায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৯০ থেকে ১২০ কিলোমিটার। এর প্রভাবে বিভিন্ন এলাকায় জলোচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়।