বন্যার পানিতে ভাসছে দেড় লক্ষাধিক মানুষের ঈদ আনন্দ

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট | 2024-06-16 18:18:48

ঈদ মানে হাসি। ঈদ মানে খুশি। সেই হাসি-খুশি নেই সিলেটের দেড় লক্ষাধিক মানুষের মুখে। সোমবার (১৭জুন) পালিত হবে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা। ত্যাগের মহিমা নিয়ে ঈদ উদযাপন করবে সারাদেশের মানুষ। কিন্তু ইতোমধ্যেই সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। তাই সিলেটের দেড় লক্ষাধিক মানুষের মুখে নেই ঈদের আনন্দ।

জানা যায়, উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও টানা বৃষ্টির পানিতে সিলেটের সীমান্ত উপজেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্ট হয়েছে। ইতোমধ্যেই প্রদান দুটি নদী সুরমা ও কুশিয়ারা দুটি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও কিছু কিছু স্থানে পানি বিপদসীমার কাছাকাছি রয়েছে।

সিলেটের ১৩টি উপজেলার মধ্যে ৯টিতে বন্যা দেখা দিয়েছে। পুরো জেলায় ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৮ জন মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছেন। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি প্লাবিত হয়েছে গোয়াইনঘাট উপজেলা। এই উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ১ লাখ ১৪ হাজার ৬০০ জন। জেলার ১৩টি উপজেলায় মোট ৫৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্র খুলেছে জেলা প্রশাসন। আশ্রয় নিয়েছেন ৫৩ জন। এরমধ্যে ওসমানী নগরে ৪৩ জন ও বালাগঞ্জে ১০জন আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট কার্যালয়ের তথ্যমতে, রোববার (১৬জুন) বিকাল ৩টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ৯২ সেন্টিমিটার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা নদীর ফেঞ্চুগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার ও গোয়াইনঘাটের সারি নদীর সারিঘাট পয়েন্টে ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো.ওমর ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে সিলেটে ১৬ জুন সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণের সতর্কবাণী দিয়েছেন।

এদিকে, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক। উপজেলার গোয়াইনঘাট-সারিঘাট ও সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়কের উপর দিয়ে একাধিক স্থানে বন্যার পানি প্রবাহিত হচ্ছে। তাছাড়া কানাইঘাট উপজেলায় বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। বাজার হাটে হাঁটু সমান পানিও দেখা যায়।

নতুন করে কানাইঘাট উপজেলার ৯ টি ইউনিয়নে হাওর ও নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। ইতোমধ্যে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ ওই এলাকাগুলো পরিদর্শন করেছেন এবং অতি ঝুঁকিপূর্ণ প্রবণ এলাকায় আশ্রয় কেন্দ্রে দ্রুত অবস্থান নিতে মাইকিং করা হচ্ছে।

সিলেট জেলা প্রশাসন ও সিলেট সিটি করপোরেশন সূত্র জানিয়েছে, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুতি আছে। জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন এলাকায় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রতিটি উপজেলায় উদ্ধারকাজের জন্য নৌকাও প্রস্তুত আছে। ঈদের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বিশেষ খাবারের আয়োজনের ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এ ছাড়া বন্যা পরিস্থিতিতে ত্রাণসহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর