দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় চট্টগ্রামের ঈদ জামাতে দোয়া 

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম | 2024-06-17 10:49:15

যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে উদযাপিত হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা। চট্টগ্রামের জমিয়তুল ফালাহ্ মসজিদ প্রাঙ্গণে সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে ঈদের নামাজে অংশ নিয়েছেন হাজারো ধর্মপ্রাণ মুসল্লি। ঈদের নামাজ আদায় শেষে সবাই দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় মহান আল্লাহর কাছে দু'হাতে তোলে দোয়া করেন।

সোমবার (১৭ জুন) সকাল সাড়ে ৭টায় নগরীর ওয়াসা মোড়স্থ জমিয়তুল ফালাহ প্রাঙ্গণে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) তত্ত্বাবধানে ঈদ জামাতে ইমামতি করেন জমিয়তুল ফালাহ জাতীয় মসজিদের খতিব হযরতুল আল্লামা সৈয়দ আবু তালেব মোহাম্মদ আলাউদ্দীন আল কাদেরী।

সাধারণ মুসল্লিদের পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, বিএনপি নেতা মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, জাতীয় পার্টির মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী ও সোলায়মান আলম শেঠসহ রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ঈদুল আজহার প্রধান জামাতে অংশ নেন।

একই স্থানে দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল সোয়া ৮টায়। এই জামাতে ইমামতি করেন জমিয়তুল ফালাহ্ মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মৌলানা আহমুদুল হক।

নামাজ শেষে দোয়া ও মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ জানায় হাজারও হাত। গুনাহ থেকে মুক্তি এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করা হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর পরিবার, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করা হয়। সব মৃত ব্যক্তির কবরের আজাব থেকে মুক্তির দোয়া করা হয়েছে। যেকোনো বিপদ থেকে দেশকে হেফাজতের জন্য প্রার্থনা করা হয়েছে। খতিব ও ইমাম বাংলাদেশকে সব ষড়যন্ত্রের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য দোয়া করেন। ফিলিস্তিনসহ গোটা বিশ্বের নিপীড়িত মুসলমানদের জন্য প্রার্থনা করা হয়। এসময় ‘আমিন আমিন’ ধ্বনিতে মুখরিত হয় জমিয়তুল ফালাহ প্রাঙ্গণ।

এদিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় ঈদ জামাত কমিটির ব্যবস্থাপনায় ঈদুল আজহার জামাত স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়াম মাঠে সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হয়। ইমামতি করেন বায়তুশ শরফ আদর্শ সিনিয়র কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আল্লামা ড. সাইয়েদ আবু নোমান।

এর আগে ঈদের নামাজ পড়ার জন্য আতর মেখে জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে আসেন মুসল্লীরা। খতিব এ সময় খুতবা পাঠ করেন। খুতবা পড়ার সময় কিভাবে কোরবানি করতে হবে, কোরবানির মাংস কিভাবে বিলিবন্টন করতে হবে ইত্যাদি সম্পর্কে বয়ান করেন।

এছাড়া সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে ৯টি মসজিদে সকাল সাড়ে ৭টায় ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।

মসজিদগুলো হলো- লালদিঘী সিটি করপোরেশন শাহী জামে মসজিদ, হযরত শেখ ফরিদ (র.) চশমা ঈদগাহ মসজিদ, সুগন্ধা আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, চকবাজার সিটি করপোরেশন জামে মসজিদ, জহুর হকার্স মার্কেট জামে মসজিদ, দক্ষিণ খুলশী (ভিআইপি) আবাসিক এলাকা জামে মসজিদ, আরেফীন নগর কেন্দ্রীয় কবরস্থান জামে মসজিদ, সাগরিকা গরুবাজার জামে মসজিদ এবং মা আয়েশা সিদ্দিকী চসিক জামে মসজিদ (সাগরিকা জহুর আহমদ চৌধুরী স্টেডিয়াম সংলগ্ন)। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরদের তত্ত্বাবধানে একটি করে প্রধান ঈদ জামাত স্ব স্ব মসজিদ ও ঈদগাহে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ঈদ জামাত শেষে শুরু হয় পশু কোরবানির তোড়জোড়। ভোরেই কোরবানি করার জন্য পশুকে গোসল করিয়ে প্রস্তুত করে রাখা হয়। অনেকে পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদুল আজহা উদযাপন করতে ছুটে গেছেন গ্রামে। অনেকে যেতে পারেননি বা যাননি। যারা শহরে রয়ে গেছেন, তারা নিজেদের ও প্রিয়জনের নামে পশু কোরবানি দিয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ে সচেষ্ট হয়েছেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর