রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাদিক এগ্রো। কোরবানির পশু বিক্রি নিয়ে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে এই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে সাদিক এগ্রোর আলোচিত ১৫ লাখ টাকায় একটি ছাগল বিক্রি নিয়ে । যদিও এই তথ্য ছড়িয়ে পড়ায় ১৫ লাখ টাকা ছাগলটি কেনা সেই ক্রেতা আর আসেন নি।
এক লাখ টাকা বুকিং দিয়ে ছাগলটি কিনলেও পরে সেটি আর কেউ সেটি নিতে আসে নি। ফলে লোকসানের মুখে পড়েছেন সাদিক এগ্রো।
ঈদের আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় একটি ছাগলের ভিডিও। ১৮০ কেজি ওজনের ছাগলটির দাম হাঁকা হয় ১৫ লাখ টাকা। ৬ ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার খাসিটি বাজারে নিয়ে আসে সাদিক এগ্রো।
আলোচনার তুঙ্গে থাকা ছাগলটি দেখতে সাদিক এগ্রোর মোহাম্মদপুরের খামারে দেখা গেছে উপচে পড়া ভিড়। দর্শনার্থীদের গা ঠেলে এগিয়ে এসেছেন ক্রেতারাও।
আলোচিত সেই ছাগলটি কিনে নেন একজন তরুণ। রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকার ওই তরুণ এক লাখ টাকা অগ্রিম দিয়ে বুকিংও দেন। ধূসর বাদামি রঙের খাসিটি গত ১২ জুন ক্রেতা বাকি টাকা পরিশোধ করে নিয়ে যাওয়ার কথা।
তবে সাদিক এগ্রো জানিয়েছে, বুকিং দিলেও ক্রেতা পরবর্তীতে ছাগলটি নেননি।
সাদিক এগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেন বুধবার বিকালে বলেন, 'উনি (ক্রেতা) আসলেন, এক লাখ টাকা এডভান্স করলেন। এক লাখ টাকা একটা হ্যান্ডসাম এমাউন্ট। তিনি ১২ তারিখ নিয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু তিনি আসেননি।'
সাদিক এগ্রো ওই ক্রেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলো কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, '১১তারিখ থেকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু তাকে ফোনে পাইনি।'
এতে সাদিক এগ্রোর কোনো লোকসান হয়েছে কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে ইমরান হোসেন বলেন, 'লোকসান তো হয়েছেই। তিনি বুকিং দেয়ার পরে অনেক কাস্টমার এসেছিলোম আমরা এটা বিক্রি করতে পারতাম।'
যদিও খাসিটি বুকিং দেয়ার সময় ক্রেতা বলেছিলেন, 'স্বপ্ন ছিলো এ রকম একটা খাসির। এ রকম খাসি আগে কখনো দেখি নাই। এই প্রথম দেখা। এটা আমার হবে জানা ছিলো না। আল্লাহ নসিবে রাখছে তাই হইছে।'
এদিকে খাসিটি কেনার সময় একটি ইউটিউব চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দেন ওই ক্রেতা। ১৫ লাখ টাকায় খাসিই কেনার সেই ভিডিওটি পরবর্তীতে ট্রলে পরিণত হয়। সমালোচিত হয় সাদিক এগ্রো।
পরে জানা যায়, খাসি বুকিং দেয়া ক্রেতা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের একজন কর্মকর্তার সন্তান। বিষয়টি প্রচারের পর ওই রাজস্ব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধানের আহ্বান জানিয়েছেন নেটিজেনরা।
এক কোটি টাকায় গরু ও ১৫ লাখ টাকায় খাসি বিক্রির কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হয় সাদিক এগ্রো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাদিক এগ্রোকে বয়কট করারও রব ওঠে।
সাদিক এগ্রো সূত্রে জানা গেছে, ছাগলটির নাম ‘মস্তান’। নাম দামের সঙ্গে অভ্যাসও ‘নবাবি’! রোজ ১ কেজি আপেল খায় এই ছাগলটি! মানুষ দেখলে চলাচল করে নবাবের মতো!
উচ্চতায় প্রায় ৬ ফুট। ওজনে ১শ' ৮০ কেজির এই ছাগলের খাবার তালিকায় ১ কেজি আপেল পাশাপাশি রাখতে আঙুরসহ পুষ্টিকর খাবার।