‘মামলা তো কুমিল্লায় নাই, স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে’

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা | 2024-06-25 13:36:25

কুমিল্লায় ভুল চিকিৎসায় কিশোরী মিম আক্তার (১৫) মৃত্যুর হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত ডা. জহিরুল হক বলেছেন, মামলা তো এখন কুমিল্লায় নাই, এটা তো স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কাছে চলে গেছে।

তিনি বলেন, তাকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ডিজি অফিস থেকে ফোন দিয়েছে। রোকেয়া আপা (স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা) ফোন দিয়েছে। রোকেয়া আপাকে বিষয়টা বুঝিয়ে বলেছি। তিনি বলেছেন- তুই তো কাজ করস নাই, এলাকার মানুষকে বুঝিয়ে সুজিয়ে দে।

অভিযোগের বিষয়ে সোমবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় ডা. জহিরুল হকের নিজ চেম্বার ‘ফেইথ মেডিকেল সার্ভিস এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার’-এ বার্তা২৪.কমকে দেওয়া সাক্ষাৎকার শেষে প্রতিবেদকের সামনেই ফোনে জনৈক ব্যক্তির সাথে এসব কথা বলেন। এসময় গোপনে অডিও কথোপকথন ধারণ করে এই প্রতিবেদক।

এসময় কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেনকে ইঙ্গিত করে ডা. জহিরুল হক বলেন, ওসি ফিরোজকে বলেছি, ভাই এই অবস্থা। ওসি বলেছে, ভাই লোক পাঠাবো নাকি আবার?

এরআগে, বার্তা২৪.কমের কাছে আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেন ডা. জহিরুল হক। এসময় অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমি রোগীকে অপারেশন করিনি।ডাক্তার এনেস্থিসিয়া (অচেতন) করার পর রোগীর অবস্থা খারাপ হতে থাকে। যার কারণে কুমিল্লা সদর হাসপাতালে পাঠাই। সেখানে নেওয়ার পথে রোগী মারা যায়।

রোগী মৃত্যুর দায় এড়াতে পারেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যেখানে আমি ছুড়ি-কাঁচি লাগাইনি, সেখানে মৃত্যুর দায় আমি কেন নিবো? আমি তো ভুল করিনি।

তাহলে ভুলটা কার? জবাবে তিনি বলেন, আমি জানি না। রোগী অপারেশনের সময় কিছু সমস্যা হয়ে যেতেই পারে। সে কারণে যদি ডাক্তার দায়ী হয়, তাহলে কোনো ডাক্তারই অপারেশন করবে না।

এদিকে ঘটনার রাতে মিমের মা লিপি আক্তার বলেন, আমার মেয়ে সুস্থ স্বাভাবিক ছিল। গলায় ছোট একটা টনসিল হয়েছে। অপারেশন থিয়েটারে ঢুকিয়ে ১০ মিনিটের মধ্যে জহির ডাক্তার বের হয়ে বলে আমার মেয়ে হার্ট অ্যাটাক করেছে। তারপর তারাই আমার মেয়েকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গেছে। পথে আমার মেয়ে মারা গেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফিরোজ হোসেন বার্তা২৪.কম-কে বলেন, এ বিষয়ে থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ হয়নি। তবে সিভিল সার্জনের মাধ্যমে ওই হাসপাতাল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে বলে জেনেছি।

প্রসঙ্গত, গত রোববার রাত ১০টার দিকে কুমিল্লা নগরীর ঝাউতলা এলাকায় অবস্থিত হেলথ এন্ড ডক্টরস্ জেনারেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় মিম আক্তার (১৫) নামে ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগ উঠে। এ ঘটনার পর থেকে হাসপাতালে তালা ঝুলছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর