ফেনীতে বাড়ছে সাক্ষরতার হার, জনসংখ্যা সাড়ে ১৬ লাখ

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম,ফেনী | 2024-06-29 12:12:11

বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা ফেনীর জনশুমারি ও গৃহগণনা প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। ২০২২ সালের শুমারি অনুযায়ী ফেনীতে জনসংখ্যা ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ৮৯৬ জন। এ জেলায় ৭ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠীর সাক্ষরতার হার ৮০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। অন্যদিকে জাতীয়ভাবে শিক্ষার হার ৭৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। জেলায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ২২ শতাংশ, যা ২০১১ সালের শুমারিতে ছিল ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব ১ হাজার ৬৬৫ জন।

জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২ এর ফেনী জেলা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়। শনিবার (২৯ জুন) ফেনী জেলার জনশুমারির বিভিন্ন তথ্য বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন জেলা পরিসংখ্যান কার্যালয়ের উপ পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. তানজীব হাসান ভুঁইয়া।

কার্যালয়টির দেয়া তথ্যানুযায়ী, ফেনী জেলার মোট জনসংখ্যা ১৬ লাখ ৪৮ হাজার ৮৯৬ জন। তার মধ্যে ৪৭ দশমিক ৩৩ শতাংশ পুরুষ এবং ৫১ দশমিক ৬৭ শতাংশ নারী। জেলায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সংখ্যা ৯০৬ জন। মোট পরিবারের সংখ্যা ৩ লাখ ৭৭ হাজার ১৬৪। ধর্মভিত্তিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী বর্তমানে জেলার ৯৪ দশমিক ৪১ শতাংশ মানুষ মুসলিম ধর্মের অনুসারী। বাকি সাড়ে ৫ শতাংশ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। জেলায় সর্বাধিক জনসংখ্যা ফেনী সদর উপজেলায়। সবচেয়ে কম জনসংখ্যা পরশুরাম উপজেলায়।

ফেনীতে ৭ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠীর সাক্ষরতার হার ৮০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। যা জাতীয় পর্যায়ে ৭৪ দশমিক ৮০ শতাংশ। তার মধ্যে ৮২ দশমিক ৫৮ শতাংশ পুরুষ এবং ৭৯ দশমিক ২১ শতাংশ নারী। একই বয়সী জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে দেশের পল্লী এলাকায় সাক্ষরতার হার ৭৯ দশমিক ৪১ শতাংশ ও শহর এলাকায় ৮৪ দশমিক ০২ শতাংশ। সাক্ষরতার হারে ফেনী সদরে সর্বোচ্চ ৮৩ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং সোনাগাজীতে সর্বনিম্ন ৭৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

ফেনীতে বর্তমানে জেলায় মোট জনসংখ্যার ৫৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ নির্ভরশীল। যেখানে জাতীয়ভাবে নির্ভরশীলতার হার ৫৩ শতাংশ। অপরদিকে জেলায় প্রবাসীর সংখ্যা ১ লাখ ৫৪ হাজার ২৪৩ জন। এ সংখ্যা জেলার মোট জনসংখ্যার ১০ দশমিক ৭০ শতাংশ। মোট জনসংখ্যার ৩৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ পরিবার রেমিটেন্স পেয়ে থাকেন। জেলায় মোট ১ লাখ ২৫ হাজার ২৭০টি পরিবার রেমিটেন্স গ্রহণ করেন। যার মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৩ দশমিক ৫ শতাংশ ফেনী সদর উপজেলায় এবং ২য় অবস্থানে রয়েছে দাগনভুঞা উপজেলা। এ উপজেলায় ১৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ পরিবার রেমিটেন্স গ্রহণ করেন।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, জেলায় কাজে নিয়োজিত মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে সর্বাধিক ৫৬ দশমিক ৪৬ শতাংশ সেবাখাতে কর্মরত। এছাড়াও উক্ত জনগোষ্ঠীর মধ্যে ২৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ কৃষি এবং ১৪ দশমিক ৭৬ শতাংশ শিল্পখাতে কর্মরত। জেলায় ৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৫৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ এর নিজস্ব ব্যবহারের জন্য মোবাইল ফোন রয়েছে। অপরদিকে ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী মোট জনসংখ্যার মধ্যে ৭৩ দশমিক ৬১ শতাংশের নিজস্ব ব্যবহারের জন্য মোবাইল ফোন রয়েছে। জেলায় ৫ বছর ও তদুর্ধ্ব বয়সী মোট জনগোষ্ঠীর ৪১ দশমিক ৫১ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন এবং ১৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী জনগোষ্ঠীর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর হার ৫২ দশমিক ২ শতাংশ।

প্রতিবেদন প্রকাশনা বিষয়ে ইতোপূর্বে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো'র মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনশুমারি ও গৃহগণনার কাজটি সম্পন্ন হয়েছে। সঠিক তথ্য নিশ্চিতে প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে অনেকদূর এগিয়েছে। এখন অর্থনৈতিক শুমারির কার্যক্রম চলমান। এ প্রতিবেদন প্রকাশ হলে আমাদের উন্নয়নের চিত্র সবার সামনে তুলে ধরা হবে।

ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহীনা আক্তার বলেন, প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে প্রচেষ্টার উদাহরণ প্রযুক্তিনির্ভর জনশুমারি এবং গৃহগণনা। নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করে সরকার সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছেন। সবাইকে পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হতে উৎসাহ দেয়ার আহ্বান জানান তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর