শেকৃবি শিক্ষকদের এক প্রতিবাদলিপিতে আটের অধিক বানান ভুল

, জাতীয়

শেকৃবি প্রতিনিধি বার্তা২৪.কম | 2024-07-02 00:40:03

৭০ জনের অধিক শিক্ষকের স্বাক্ষর সম্বলিত শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) শিক্ষকগণ কর্তৃক পেনশন সংক্রান্ত অর্থমন্ত্রনালয়ের জারীকৃত প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে সোমবার (১লা জুলাই) প্রকাশিত প্রতিবাদলিপিতে আটটির অধিক বানান ভুল ও অসঙ্গতি দেখা গেছে।

মূলত অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পেনশন সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহারের দাবিতে দেশের অন্যন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একযোগে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের আহ্বানে শেকৃবির ক্লাস, পরীক্ষাসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ ঘোষনা করে।

প্রতিবাদ ও কার্যক্রম বন্ধ সংক্রান্ত প্রতিবাদলিপিতে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ কর্তৃক স্বাক্ষরকৃত প্রতিবাদলিপিতে অসংখ্য বানান ভুল দেখা যায়।

বাংলা একাডেমির আধুনিক বাংলা অভিধান অনুযায়ী, ওই নোটিশের ভুলগুলো হলো, ‘১ জুলাই, স্কীম, দাবীতে, সর্বাত্নক, অন্তর্ভূক্তির, ক্লাশ, ঘোষনা, সকল সাধারন শিক্ষকবৃন্দ।’

উপর্যুক্ত অসংগতি ও ভুল বানানগুলোর প্রমিতরূপ হলো, ‘১লা জুলাই, স্কিমসংক্রান্ত, দাবিতে, ক্লাস, ঘোষণা, কোনো, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বা বিশ্ববিদ্যালয়-শিক্ষকদের, অন্তর্ভুক্তি।’

নোটিশে যে ভুলগুলো হয়েছে, তার মধ্যে কিছু ভুলের ব্যাখ্যা নিম্নে দেওয়া হলো :

বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানের পরিশিষ্ট ‘গ’-এ বাংলা তারিখ ও সময় লেখার নিয়ম বিধৃত হয়েছে। বিশেষ দ্রষ্টব্যে বলা হয়েছে: এ্যাক জুলাই, শোলো ডিসেম্বর, পোঁচিশ বৈশাখ প্রভৃতি উচ্চারণ অশুদ্ধ। শুদ্ধ ও মান্য রীতি: পয়লা বৈশাখ, অ্যাগারোই জ্যৈষ্ঠ, পহেলা জুলাই, পোঁচিশে বৈশাখ প্রভৃতি। উপর্যুক্ত নোটিশে সব তারিখের ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে।

‘কোন’ শব্দটি যখন সর্বনাম হিসেবে ব্যবহৃত হয় তখন এর অর্থ: কী, কে, কোনটি (কোন দিন, কোনটি চাই, কোন জন)। এটি কোনও বা কোনো শব্দের সমার্থক নয়। যেমন: ‘আপনি কোন দেশে থাকেন’ বাক্যে একই অর্থ: প্রকাশের জন্য ‘কোনও’ বা ‘কোনো’ পদ ব্যবহার করা যাবে না। বাক্যে সর্বনাম ও বিশেষণ হিসেবে ব্যবহৃত বাংলা ‘কোনো’ শব্দের অর্থ: অনির্দিষ্ট বা অনির্ধারিত একজন লোক বিষয় বা বস্তু, কে বা কী (কোনো বিষয়), বহুর মধ্যে একটি বা একজন বাএআবাঅ, পৃষ্ঠা: ৩৩৭, ৩৩৮। নোটিশে ‘কোনো’-এর পরিবর্তে ‘কোন’ লেখা হয়েছে।

২০১২ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত ‘বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম’ পুস্তিকার ২.২ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, বাংলায় এ বর্ণ বা -েকার দিয়ে এ এবং অ্যা এই উভয় ধ্বনি নির্দেশিত হয়। যেমন: কেন, কেনো (ক্রয় করো); খেলা, খেলি; গেল, গেলে, গেছে; দেখা, দেখি; জেনো, যেন; ব্যাঙ, ল্যাঠা। তবে, বিদেশি শব্দে ক্ষেত্র অনুযায়ী অ্যা বা ্যা-কার ব্যবহৃত হবে। সেক্ষেত্রে ‘একাডেমি’ না হয়ে ‘অ্যাকাডেমি’ হবে।

বাংলা একাডেমি প্রমিত বাংলা বানানের নিয়ম পুস্তিকার ২.১ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, সব অতৎসম অর্থাৎ তদ্ভব, দেশি, বিদেশি ও মিশ্র শব্দে কেবল ই এবং উ এবং এদের কারচিহ্ন ব্যবহৃত হবে। কারণ বাংলায় উচ্চারণগত দীর্ঘস্বর নেই। ই ঈ এবং উ ঊ প্রভৃতির উচ্চারণ অভিন্ন। তাই অতৎসম (দেশি, বিদেশি) শব্দে ঈ-কার নিষ্প্রয়োজন। তবে, ‘লাইব্রেরী’ ও ‘দাবি’ শব্দের মতো বিদেশি বানানে ঈ-কার দিয়ে লেখা হয়েছে।

এছাড়া সর্বাত্বক হবে যেখানে প্রতিবাদ লিপির দুই জায়গায় সর্বাত্নক লিখা হয়েছে।ঘোষণা শব্দে 'ণ' বসলেও 'ন' দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া সকল আবার শিক্ষক বৃন্দ লিখা হয়েছে।

এছাড়াও বাংলা একাডেমি আধুনিক বাংলা অভিধানের ৫৫ নম্বর পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে ‘ভুক্ত’ বানানে ঊ-কার পরিহার্য। তবে, নোটিশে ‘অন্তর্ভূক্তি’ লেখা হয়েছে, যা ভুল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর