জাতিসংঘের উদ্যোগে রাজধানীতে কাঁঠাল মেলা

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2024-07-04 17:40:39

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) ঢাকায় একটি কাঁঠাল মেলার আয়োজন করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশে কাঁঠালের প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ, প্রদর্শন এবং প্রচারের জন্য ওয়েবিনারের আয়োজন করে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) কাঁঠাল মেলা উপলক্ষে ‘ওয়ান কান্ট্রি ওয়ান প্রোডাক্ট’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বাংলাদেশের কাঁঠালের অগ্রগতি সম্পর্কে মতবিনিময় করা হয়।

কাঁঠাল এফএও-এর 'এক দেশ এক অগ্রাধিকার পণ্য' (OCOP) উদ্যোগের জন্য নির্বাচিত বিশেষ একটি কৃষিপণ্য (SAPs)।

কাঁঠাল মেলাটি রাজধানী ফার্মগেট এলাকার বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (BARC) প্রাঙ্গণে ৪ জুলাই শুরু হয়ে চলবে ৬ জুলাই পর্যন্ত। সর্বসাধারণের জন্য এ মেলা উন্মুক্ত।

ওয়েবিনারে অংশ নেন ওসিওপি সচিবালয়ের নির্বাহী সচিব জিংউয়ান জিয়া এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার, ওসিওপি ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্সের চেয়ারপারসন।

ওয়েবিনারে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ওসিওপি বাস্তবায়ন, বাংলাদেশে ওসিওপি বাস্তবায়ন, কাঁঠাল গবেষণা ও ভ্যালু চেইনের সংক্ষিপ্ত বিবরণ, কাঁঠালের ভ্যালু চেইনের ক্ষুদ্র এবং অতি ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়ন, কাঁঠালের মূল্যে বেসরকারিখাতের সম্পৃক্ততাসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত ছিল।

বাংলাদেশে এফএও রিপ্রেসেনটেটিভ জিয়াকুন শি বলেন, ২০২৩ সালে ওসিওপি উদ্যোগ শুরু হওয়ার পর থেকে এফএও বাংলাদেশ কাঁঠালের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে ওসিওপি জাতীয় টাস্কফোর্স গঠন একটি উল্লেখযোগ্য কাজ।

জিয়াকুন শি বলেন, কাঁঠাল বাংলাদেশের একটি বিশেষ ফল এবং এর প্রচারে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এ সময় তিনি আরো বলেন, কাঁঠালের ক্ষতি ও অপচয় কমাতে এবং পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব কমানোর লক্ষ্যে সম্পদের ব্যবহার কমানো এবং কাঁঠাল চাষীদের জীবন-জীবিকা এবং তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উন্নতি নিয়েও আমরা কাজ করছি।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, ভিটামিন, খনিজ ও ক্যালরির উৎস হিসেবে কাঁঠাল বাংলাদেশের মানুষের পুষ্টিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে, ছবি- সংগৃহীত 


কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার বলেন, কাঁঠাল আমাদের জাতীয় ফল এবং এটি দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও বহুল উৎপাদিত ফল। ভিটামিন, খনিজ ও ক্যালরির উৎস হিসেবে ফলটি বাংলাদেশের মানুষের পুষ্টিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে। কাঁঠালের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে প্রক্রিয়াকরণ এবং বিশেষ মূল্য সংযোজনের সম্ভাবনা রয়েছে।

ওয়েবিনারে উপস্থাপিত কাঁঠালবিষয়ক বিভিন্ন তথ্য
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (BARI) ৬টি কাঁঠালের জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে বারি কাঁঠাল-৩ এবং বারি কাঁঠাল- ৬ সারাবছর ফলন দেয়। BARI কাঁঠালের বিভিন্ন প্রক্রিয়াজাত পণ্য যেমন- ফ্রেশ কাটস, চিপস, আচার, জ্যাম, জেলি ইত্যাদির জন্য প্রযুক্তিও তৈরি করেছে। প্রকল্পটি তিনশ’য়েরও বেশি কাঁঠাল চাষী এবং বাজার সংশ্লিষ্টদের উন্নত উৎপাদন, সংগ্রহ-পরবর্তী পরিচালনা এবং ব্যবস্থাপনা, প্রক্রিয়াকরণ এবং মূল্য সংযোজন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

ওয়েবিনারে বিভিন্ন কৃষিবিদ, অনুশীলনকারী, গবেষক ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ, বেসরকারিখাতের প্রতিনিধি, কাঁঠাল শিল্পের সঙ্গে জড়িত ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা এবং সরকারি কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন

ওসিওপি ওয়েবিনারের লক্ষ্য ছিল- এ উদ্যোগ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং তাদের নিজ নিজ ‘ভ্যালু চেইন’-এর মাধ্যমে নির্বাচিত বিশেষ কৃষিপণ্যের টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রাসঙ্গিক প্রযুক্তির প্রচার করা; কাঁঠাল মেলার মাধ্যমে কেসস্টাডি এবং বাংলাদেশে কাঁঠাল সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য উপস্থাপন এবং কাঁঠালের বাজারে তাজা এবং প্রক্রিয়াজাত পণ্যের জন্য উদ্যোক্তাদের প্রচার।

এ আয়োজনটি বাংলাদেশে কাঁঠালের টেকসই উৎপাদন, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং বিপণনের বিষয়ে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং শিক্ষা সবার জানার জন্য একটি ফোরাম হিসেবে কাজ করে। ওসিওপি উদ্যোগের মাধ্যমে কাঁঠাল বা অন্যান্য বিশেষ কৃষিপণ্যের বাস্তবায়ন ও প্রচারে আগ্রহী বিভিন্ন দেশকে অবহিত করে।

ওসিওপি
এফএও ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে এফএও স্ট্র্যাটেজিক ফ্রেমওয়ার্ক ২০২২-৩১ বাস্তবায়নে এবং বিশেষ কৃষিপণ্যের (SAPs) টেকসই উন্নয়নের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক, লাভজনক এবং পরিবেশবান্ধব কৃষি খাদ্য ব্যবস্থার প্রচারের জন্য ‘এক দেশ এক অগ্রাধিকার পণ্য’ (OCOP) উদ্যোগ চালু করেছে।

এছাড়াও, এ উদ্যোগ ওসিওপি দেশগুলিকে তাদের অনন্য সম্ভাবনার সুবিধা নিতে এবং তাদের নির্দিষ্ট উৎপাদন ব্যবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেওয়া পণ্য শনাক্ত করতে সাহায্য করবে।
২০২১ সাল থেকে ৫টি এফএও অঞ্চলের ৮০টিরও বেশি সদস্য ৫০টির বেশি পণ্যের টেকসই প্রচারে তাদের দৃঢ় আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক নির্বাচিত বিশেষ কৃষিপণ্য ছিল কাঁঠাল।

এ সম্পর্কিত আরও খবর