সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের চাকরি পুর্নবহালসহ তিন দফা দাবি

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-10-09 17:01:01

চাকরিচ্যুতির সময় থেকে সম্পূর্ণ বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ চাকরি পুনর্বহাল করাসহ তিন দফা দাবি জানিয়েছেন বিগত সরকারের আমলের চাকরি হারানো সশ্রস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা।

বুধবার (৯ অক্টোবর) প্রেসক্লাবের অডিটোরিয়ামে সহযোদ্ধা কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনী সদস্যদের পক্ষে তাদের প্রধান সমন্বয়ক নাইমুল ইসলাম বলেন, বিগত সরকার স্বৈর শাসন ব্যবস্থা কায়েম রাখতে সামরিক বাহিনীর কতিপয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর হিসেবে সামরিক বাহিনীতে নিজ ক্ষমতার অপব্যবহার ও এক তরফা বিচার ব্যাবস্থার প্রয়োগে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে শত শত সামরিক বাহিনীর সদস্যদের চাকুরিচ্যুত করেছে। বঞ্চিত করেছে প্রাপ্য পেনশন থেকে, এমনকি জোর পূর্বক ইউনিট কোয়ার্টার গার্ড ও তথাকথিত আয়না ঘরে বন্দী করে অমানবিক নির্যাতন করেছে।

তিনি বলেন, সেনাবাহিনীতে এখনো ব্রিটিশ সামরিক আইন বলবৎ রয়েছে, যা যুক্তিহীন। এই আইনের ধারায় নানাসময়ে সেনাসদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়। যেহেতু অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংবিধানসহ বিভিন্ন খাত সংস্কারে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, সেখানে সেনাবাহিনীর এই ব্রিটিশ সামরিক আইনও সংস্কার করা উচিত।

এছাড়া বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে সেনাসদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পরিবারে বা আত্মীয় স্বজনের মধ্যে বিএনপি-জামায়াতের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে সামান্য ভুল পেলেই তাকে ইস্যু করে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে, যা চরম বৈষম্যমূলক।

তিনি আরো বলেন, সেনাবাহিনীর একটা নিয়ম হচ্ছে যে স্ত্রী কর্তৃক কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে তা যথাযথ তদন্ত না করেই সে সেনাসদস্যকে চাকরি হারাতে হয়। এমনকি স্ত্রী যদি পরে সে অভিযোগ তুলে নিতে চায়, তখন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অভিযোগ অব্যাহত রেখে চাকরিচ্যুত করে।

তিনি বলেন, একজন সামরিক বাহিনীর সদস্য কে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে তার ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করে স্বৈর শাসন ব্যবস্থা কায়েম করে আসছেন কতিপয় সামরিক কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, সামরিক বাহিনীর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈষম্য হলো, যেখানে নৌ ও বিমান বাহিনীর একজন সদস্য তার সিনিয়র কে স্যার বলে সম্বোধন করে সেখানে সেনা বাহিনীতে শুধুমাত্র কমিশন্ড ও জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার ব্যতিত অন্য সিনিয়রদেরকে ষ্টাফ ও ওস্তাদ বলে সম্বোধন করে থাকে। সেনাবাহিনীর মতো আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন ও সুনামধন্য বাহিনীতে এই ধরনের শব্দচয়ন অত্যন্ত বেমানান। আমরা এই বৈষম্যেরও নিরসন চাই।

সংবাদ সম্মেলনে তারা যে ৩ দফা দাবি তুলে ধরেন তা হলো-

চাকরিচ্যুত সময় থেকে অদ্যাবধি সম্পূর্ণ বেতন, ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ চাকরি পুর্নবহাল করতে হবে। যদি কোনো সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের চাকরি পূর্ণ বহাল করা সম্ভব না হয় তাহলে উক্ত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সরকারি সকল সুযোগ-সুবিধাসহ সম্পূর্ণ পেনশনের আওতাভুক্ত করতে হবে।

যে আইন কাঠামো ও এক তরফা বিচার ব্যাবস্থার প্রয়োগে শত শত সশস্ত্র সেনাসদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে সেই বিচার ব্যাবস্থার সংস্করণ করতে হবে। এসময় আরও বক্তব্য রাখেন, চাকরিচ্যুত সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমান, নৌবাহিনীর পক্ষ থেকে সমন্বয়ক মো. আব্দুল হাকিম, বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে সমন্বয়ক মো. কোরবান আলী, নৌবাহিনীর সদস্য রিয়াজুল করিম মজুমদার, বিমান বাহিনী সার্জেন্ট রেজা, সেনাসদস্য আল আমিন, সেনাসদস্য সার্জেন্ট বাশার, বিমানবাহিনীর সদস্য তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ। এসময় প্রায় দুই শতাধিক চাকরিচ্যুত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর