জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের কমিশন প্রধান আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী বলেছেন, আগের রিজিমে পুলিশ ও এনএসআই দ্বারা ভেরিফিকেশনে চাকরি প্রার্থীর রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা যাচাইয়ের অর্থহীন প্রক্রিয়া চলছিল। চাকরিতে এত ভেরিফিকেশনের দরকার নেই। ব্যক্তি হিসেবে চাকরি প্রার্থী কেমন সেটি বিবেচনাই মুখ্য বিষয়। সরকারি কর্মচারী ব্যক্তি হিসেবে তার কাজ ঠিকমত করছেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে রাজশাহীতে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আমরা এমন একটি প্রতিবেদন দিতে চাই যা বাস্তবতা বিবর্জিত নয়। জনগণ কী চাচ্ছে তা শোনার জন্য আমরা এসেছি। আমরা সরকারের কাছে একটি সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরতে চাই। এখন যে প্রশাসন আছে সেখান থেকে কীভাবে আরও ভালো সেবা দেওয়া যায় সেটিই আপনাদের কাছ থেকে শোনা আমাদের উদ্দেশ্য।
তিনি নিজ নিজ জায়গা থেকে অর্পিত দায়িত্বটা আরও ভালোভাবে পালন করার এবং মানুষের কীসে ভালো হবে তা চিন্তা করার অনুরোধ জানান। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এক দুই বছরের মধ্যেই দেশের চেহারায় একটা পরিবর্তন আসবে মর্মে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
কমিশনের সদস্য এবং ছাত্র সমন্বয়ক মেহেদী হাসান বলেন, সাম্য, ইনসাফ ও মানবিকতা ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার। ছাত্র আন্দোলন হয়েছিল কারণ আগের সরকারের নিকট থেকে মানুষ এগুলো পায়নি। তিনি আগস্টের পরিবর্তনের দর্শন গ্রহণ এবং জনপ্রশাসনে নিযুক্ত কর্মচারীদের মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় জনপ্রশাসনে নিযুক্ত কর্মচারীদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা, আন্তঃক্যাডার বৈষম্য দূর করা, আবেদন বা চিঠিপত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে মীমাংসা হওয়া, পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা, ডেপুটেশন বন্ধ করা, পাবলিক সার্ভিস কমিশন এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সকল ক্যাডারের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা, দক্ষতা ও সততার ভিত্তিতে পদোন্নতি, সেবাগ্রহীতার রেটিং প্রদান, শিশুদের জন্য মাঠ উন্মুক্ত করা, কোচিং ও প্রাইভেট বন্ধ করা, দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের মত নানা সুপারিশ উঠে আসে অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে।
এ সময় কমিশনের সদস্য এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমানের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য ও স্বাস্থ্য ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রফেসর ডা. সৈয়দা শাহীনা সোবহান, ছাত্র প্রতিনিধি ও কমিশনের সদস্য মেহেদী হাসান, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ুন কবীর, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি আলমগীর রহমান, আরএমপি কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, রাজশাহীর পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামানসহ আট জেলার জেলা প্রশাসক ও বিভিন্ন সরকারি অফিসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।