ফেনীতে অপহরণের ৪ দিন পর স্কুল ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার, গ্রেফতার ৩

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ফেনী | 2024-12-12 20:27:05

ফেনীতে আহনাফ আল মাঈন নাশিত (১০) নামের এক স্কুল শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে শহরতলীর দেওয়ানগঞ্জ রেললাইন সংলগ্ন ডোবা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। গত ৪ দিন আগে নাশিতকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

এ ঘটনায় ইতোমধ্যে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন, ফেনী পৌর ছাত্রদল নেতা আশ্রাফ হোসেন তুষার (২০), মোবারক হোসেন ওয়াসিম (২০) ও ওমর ফারুক রিপাত (২০)। তারা সবাই শহরের একাডেমি এলাকার আতিকুল আলম সড়কের বাসিন্দা। সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন ফেনী পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান।

নিহত শিক্ষার্থী নাশিত ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার সদর ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামের আনসার আলী ফকির বাড়ির মাঈন উদ্দিন সোহাগের ছোট ছেলে। পরিবারের সাথে দীর্ঘদিন ধরে তিনি ফেনী পৌরসভার একাডেমি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।

পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান বলেন, গত রোববার (৮ ডিসেম্বর) শহরের একাডেমি এলাকার আতিকুল আলম সড়কে লাইট হাউজে কোচিং ক্লাস শেষ করে স্থানীয় বায়তুল খায়ের জামে মসজিদে নামাজ পড়তে যায় নাশিত। নামাজ শেষে বাসায় ফেরার পথে পূর্বপরিচিত আসামি তুষার ও তার সহযোগীরা নাশিতকে অপহরণ করে দেওয়ানগঞ্জ এলাকায় নিয়ে জুসের সাথে ওষুধ মিশিয়ে অচেতন করেন। পরে নাশিতের ছবি তুলে তার বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগের হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পাঠিয়ে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তারা। একপর্যায়ে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে মরদেহ রেললাইনের পাশে ডোবায় ফেলে দেন। মরদেহ পানিতে ভেসে না উঠার জন্য ওই শিক্ষার্থীর স্কুল ব্যাগে পাথর ভরে চাপা দেন তারা।

পুলিশ সুপার বলেন, এ ঘটনায় শিক্ষার্থীর বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগ গত ৯ ডিসেম্বর ফেনী মডেল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তারপর দুই দিন ধরে একটি মোবাইল নম্বর থেকে নাশিতের বাবাকে কল করে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে গতকাল রাতে নিহতের বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগ পুলিশকে তুষার নামে এক কিশোরকে সন্দেহের কথা জানান। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রাতে তুষারকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হলে তার দেওয়া তথ্যমতে দেওয়ানগঞ্জ এলাকার একটি ডোবা থেকে নাশিতের স্কুল ব্যাগসহ মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িত অন্য দুই আসামিকে রাতেই গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে ফেনী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদঘাটনে কাজ চলছে বলে জানান পুলিশ সুপার মো. হাবিবুর রহমান।

নিহত শিক্ষার্থীর বাবা মাঈন উদ্দিন সোহাগ বলেন, আমার ছেলে কোচিং শেষ করে নামাজ পড়ার জন্য মসজিদে যায়। এরপর বাসায় না ফিরলে আমরা তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করি। রাত ১টার দিকে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে মেসেজ দিয়ে ছেলের ছবি দিয়ে ১২ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণের টাকা দিতে রাজিও ছিলাম। তারপরও তারা আমার ছেলেকে হত্যা করল। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

এ সম্পর্কিত আরও খবর