দেশের উত্তরের শীতপ্রবণ জেলা ঠাকুরগাঁও। সবার আগে শীত এসে মাঝখানে জেঁকে বসে শীত। গত এক সপ্তাহ ধরে দেখা মেলেনি সূর্যের। শুক্রবার সকাল ৯টায় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে৷ মধ্য ডিসেম্বরে জেঁকে বসেছে শীত বিপর্যস্ত হয়ে পরেছে জনজীবন। শীত মোকাবিলা সংগ্রামে রুপ নিয়েছে সমাজের অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষের। শীতের প্রকোপে নাকাল দিন আনা মানুষদের জীবন ব্যবস্থা৷
শীতার্তদের কষ্ট নিবারণে উষ্ণতা নিয়ে খেটে-খাওয়া মানুষের বাড়িতে রাতের বেলা কম্বল পৌঁছে দিয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা।
শুক্রবার রাতে জেলার সদর উপজেলার রহিমানপুর ইউনিয়নের মাদারগঞ্জ, হরিহরপুর, শিমুলতলা ও রোড এলাকার মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও খেটে-খাওয়া মানুষের মাঝে পৌঁছে দেওয়া হয় শীতবস্ত্র।
মাদরাসা শিক্ষার্থী আব্দুল কাদের বলেন, কয়েকদিন থেকে খুব ঠান্ডা করছে৷ আমার আগের একটা কম্বল ছিল এখন ডিসি আপা আরেকটা দিল৷ এখন আর বেশি ঠান্ডা লাগবে না৷ মায়ের মতন আদর করে কম্বল মুড়িয়ে দিলেন তিনি। মনে হল আমার মা আমাকে কম্বল মুড়ায় দিচ্ছেন৷ আমরা খুব খুশি হয়েছি৷
ঘুমিয়ে গেছিলেন ষাটোর্ধ বিলকিস বানু৷ বাড়িতে গিয়ে আচমকায় কম্বল মুড়িয়ে দিলেন জেলা প্রশাসক। কম্বল পেয়ে তিনি বলেন, মুই তো ঘুমাইছিনু৷ হুট করে ডিসি আপাডা আসেহেনে কম্বল দিল৷ কয় দিন থেকে খুবে ঠান্ডা। ঠান্ডার কারনে ঘুম হয়না৷ আইজাকা নয়া কম্বল দিল ভালো ঘুম হবে৷ আল্লাহ ডিসি ডাক ভালো রাখুক।
মাদারগঞ্জ মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ফয়জুর রহমান বলেন, সবসময় পবিত্র অবস্থায় ছাত্রদের থাকতে হয়। সে কারনে অযুর প্রয়োজনে অধিকাংশ সময় পানি নাড়তে হয়৷ আজকে সকল ছাত্রদের ডিসি স্যার শীতবস্ত্র দিয়েছেন৷ এতে তারা সেটা মুড়িয়ে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবে। পাশাপাশি রাতে মুড়িয়ে নিয়ে ঘুমাতে পারবে৷
ঠাকুরগাঁও রোড রেলস্টেশনে শুয়ে থাকা ছিন্নমূল ফয়জুল বলেন, প্রচন্ড ঠান্ডায় ঘুম আসছিল না, এমন সময় জেলা প্রশাসক ডিসি আপা কম্বল দিল। এখন ঘুম টা ভালো হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ইসরাত ফারজানা বলেন, জেলায় শীতের প্রকোপতা ক্রমশ বেড়ে চলছে। শীতার্তদের কষ্ট লাঘবে বেশ কয়েকদিন থেকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে। প্রশাসনের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানাচ্ছি।