চট্টগ্রামে গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের এক প্রকৌশলীকে ‘থাপ্পড়’ মারার অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছেন সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন। তিনি জানান, ওই প্রকৌশলী তার সঙ্গে চরম ঔদ্ধত্যপূর্ণ এবং অশোভন আচরণ করায় তাকে বকাঝকা করেছেন। মারধরের কোনো প্রশ্নই আসে না। থাপ্পড়ের বিষয়ে গণমাধ্যমে যা প্রকাশিত হয়েছে, তা সঠিক নয় বলেও জানান তিনি।
উল্টো ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন দুর্নীতি এবং গ্রাহক ভোগান্তির বিভিন্ন কাগজপত্র সাংবাদিকদের সরবরাহ করেন মেয়র।
জানা যায়, নগরীর পোর্ট কানেকটিং সড়কে জলাবদ্ধতা নিরসনে কাজ করছে চসিক। ওই কাজের সময় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ভূমি দখল করে সড়ক প্রশস্ত করে চসিক। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিষয়টি মেয়রকে অবহিত করার জন্য গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের একটি প্রতিনিধি দল মেয়রের সঙ্গে দেখা করেন। দেখা করার সময় মেয়র আশরুজ্জমান পলাশ নামে এক প্রকৌশলীকে থাপ্পড় মারেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। বিষয়টি টক অব দ্য টাউনে পরিণত হয়। এ নিয়ে গৃহায়ণ কর্তমর্তারা কর্মবিরতি ও মেয়রের বিচার চেয়ে মানববন্ধন করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিকেলে তাৎক্ষণিকভাবে সাংবাদিকদের নগর ভবনে ডেকে পাঠান মেয়র।
এ সময় তিনি ওই সড়কের কাজের মানচিত্র তুলে ধরে সাংবাদিকদের জানান, গৃহায়ণের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর পরেও সে (ডিপ্লেমা ইঞ্জিনিয়ার) এসে কথা বলছেন। তার তো এখানে কথা বলার প্রয়োজন নেই। উল্টো আমার প্রকৌশলীর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছে। এর পেছনে অন্যকোনো কারণ ছিল।
২০১০ সালের ২৬ মে চট্টগ্রাম সার্কেলের তত্ত্ববধায়ক মো. সোহরাব হোসেন প্রকৌশলী স্বাক্ষরিত এক চিঠির দেখিয়ে তিনি জানান, গৃহায়ণ কর্তপক্ষের চেয়ারম্যানের কাছে চট্টগ্রামের হালিশহর হাউজিং সোসাইটির বড় পোল রাস্তার পরিত্যক্ত স্থানে অস্থায়ীভাবে কাঁচাবাজার স্থাপনের অনুমতি চায়। কিন্তু অনুমোদন মেলেনি। এগুলো আসলে দোকান নয় ঝুপড়ি বলা চলে। আমিও ঠিক জানতাম না। গতকাল ওই এলাকার নাগরিক ফোরাম আমার সাথে দেখা করে। তারা জানান, ড্রেন যদি সোজা না হয় আসন্ন বর্ষায় পানি উঠবে। আমার ড্রেন তো বাকা করা যাবে না। এরপর খোঁজ নিয়ে জানলাম হাউজিংয়ের কারণে ওই স্থানে কাজ করা যাচ্ছে না। আমি তাদের ইফতারে আগে বা পরে আসতে বলি।
সন্ধ্যায় দেখা করার সময় আমি বললাম ড্রেন কোনোভাবেই বাকা করা যাবে না। এতে সুফলের চেয় দুর্ভোগ বেশি হবে। আমাদের কেউ অবগত করেনি সড়কের কিছু অংশ বাহিরে যাওয়ার কথা। আর গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ বাজার বসানোর অনুমতি দেয়নি। বাজার দেওয়ার এখতিয়ার কেবল চসিকের। বরং ওই জায়গা দখল করে তারা অবৈধভাবে বাজার বসাতে চেয়েছিল। তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তারা এমন অপপ্রচার করছে।
এ সময় সাংবাদিকরা থাপ্পড় মারার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, মারধরের কোনো প্রশ্নই আসে না। বরং ওই প্রকৌশলী বেয়াদবি, ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিভিন্ন কাগজপত্র উদ্ধারের কথা জানান তিনি।
এ ঘটনার পরেও গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সাথে কোনো যোগাযোগ হয়নি বলেও জানান মেয়র। একইসাথে ওই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়সহ যেখানে যেখানে যাওয়ার প্রয়োজন সেখানে যাবেন বলেও জানান নাছির।