চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় প্রকাশ্যে গণপিটুনি দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন সোহেলকে হত্যার পরিকল্পনাকারী ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবের আহমেদকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
কৌশলে সোহেলকে হত্যা করে গণপিটুনি হিসেবে চালিয়ে দিতে চেয়েছিল সাবের। তাকে গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালালেও নিরাপদ স্থানে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে সে। মহিউদ্দিন সোহেল হত্যা মামলায় পুলিশ এ যাবৎ ১৯ আসামীকে গ্রেফতার করেছে।
গত ৭ জানুয়ারি পাহাড়তলী বাজারে খুন হন সরকারি কমার্স কলেজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন সোহেল। চাঁদাবাজির অভিযোগে তাকে গণপিটুনিতে মেরে ফেলা হয়েছে বলে প্রচার করা হলেও লাশ উদ্ধারের পর দেখা যায় লাশের শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন। পরবর্তীতে পরিবারের পক্ষ থেকে দায়ের করা হত্যা মামলায় তা ভিন্ন মোড় নেয়। পুলিশ শুরু করে তদন্ত।
জানা গেছে, পাহাড়তলী এলাকায় একটি জায়গা দখল করে দোকানপাট গড়ে তোলাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষ সাবের- ওসমান গংদের সঙ্গে মহিউদ্দিন সোহেলের বিরোধ তৈরি হয়েছিল। সেই বিরোধ থেকেই প্রতিপক্ষরা মহিউদ্দিন সোহেলের ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। এক পর্যায়ে এসে তাকে খুনের পরিকল্পনা করে গোপনে গঠন করা হয় কিলিং স্কোয়াড।
হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও পাহাড়তলী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক সাবের আহমেদকে ওই মামলায় করা হয় প্রধান আসামী। আর বাজার সাধারণ সম্পাদক ওসমান খানকে ২ নম্বর আসামী করা হয়েছে।
সোহেলের ছোট ভাই শিশির বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। ওই মামলায় ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও দেড়শ’ জনকে আসামী করা হয়েছে।
পুলিশ অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. ওসমান খান (৫৫), মো. শাহাদাতৎ খান রাসেল (৩৩), মোহাম্মদ শওকত খান রাজু (৩৫), মো. আজাদ হোসেন (২৯), দিদারুল আলম (৩৫), মো. মামুন (২৩), মো. মাকসুদুর রহমান, মো. নুর নবী তালুকদার (৫৫), আলাউদ্দিন, মোবারক হোসেন (২২), মো. সাহাবুদ্দিন (৩৫), রেদোয়ান ফারুক (৩৯), মো. খাজা খাইরুদ্দিন খান ছোটন (৩০), সিরাজ মাঝি (২৫), মো. রমজান আলী কিরণ (৩০), মো. ইকবাল (২১), মো. লালন (৫০) ও মো. শাকিল খান শামীম (১৯)।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জহির হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছি। এর মধ্যে আদালতে কয়েকজন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে।
নিহত মহিউদ্দিন সোহেল চট্টগ্রামের খুলশী এলাকায় ১ নম্বর রোডে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তার ছোট ভাই মামলার বাদী শিশির বার্তা২৪.কমকে বলেন, ভাইয়ের মৃত্যুর পর বিভিন্ন অজানা নাম্বার থেকে ফোন আসতে থাকে। আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ফলে আমার মা ও বড় ভাইয়ের পরিবারকে ঢাকায় পাঠিয়ে দিয়েছি। এখন আমি ছাড়া চট্টগ্রামে আর কেউ থাকে না।