ঐতিহ্য আর লোকজ সংস্কৃতির শেকড়ের টানে বছর ঘুরে চট্টগ্রামে শুরু হয়েছে শত বছরের লোকক্রীড়ার আসর জব্বারের বলীখেলা। তীব্র তাপদাহের কড়া রোদ উপেক্ষা করেও লালদিঘী মাঠে অনুষ্ঠিত এ বলীখেলায় ঢল নামে দর্শনার্থীদের। বলীদের একনজর দেখার জন্য ছুটে এসছে দূর-দূরান্ত থেকে।
বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে বলীখেলা উদ্বোধন হওয়ার কথা থাকলেও দুপুর থেকে মঞ্চের আশপাশে সমাগম ঘটে বিভিন্ন বয়সের সংস্কৃতিপ্রাণ মানুষের। পরে বিকেল সোয়া ৪টায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মাহাবুবর রহমান বেলুন উড়িয়ে বলীখেলার উদ্বোধন করেন।
এ সময় সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক বলীখেলার সমৃদ্ধি দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়েরর কাছে অনুরোধ করব বলীখেলা ও বৈশাখী মেলাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্তির জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন মহল আমাদের সংস্কৃতিকে বিনষ্টেরর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের সকল জনগণকে একত্রিত করে এসব অপচেষ্টা রুখে দিতে চাই।’
উদ্বোধনকালে সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র হাসান মাহমুদ হোসনী, ফিরিঙ্গিববাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধিরী ফরিদ, মেলার উদযাপন কমিটির সভাপতি জহরলাল হাজারী উপস্থিত ছিলেন।
এবারের ১১০তম আসরে বলীখেলায় সরাসরি চ্যালেঞ্জ হিসেবে অংশ নিচ্ছেন ১৬ প্রতিযোগী, এছাড়া বিভিন্ন রাউন্ডে বিজয়ীরা অংশ নিবেন চূড়ান্তভাবে। বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করবেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
এদিকে বলীখেলাকে কেন্দ্র করে নগরীর আন্দরকিল্লা থেকে লালদিঘী হয়ে এক বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসেছে লোকজ ও সাংস্কৃতিক মেলা। মেলায় পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ক্রেতারা। সার্বজনীনভাবে অনুষ্ঠিত ঐতিহ্য বজায় রেখে মেলায় গৃহস্থালি পণ্য, মাটির তৈরি তৈজসপত্র, বাঁশের তৈরি বিভিন্ন সরঞ্জাম, আসবাবপত্র, নকশিকাঁথার কাপড়, হরেক রকমের নাড়ু, জিলাপি, মিষ্টান্ন, বিভিন্ন স্বাদের আচার, প্লাস্টিকের জিনিসপত্র নার্সারির গাছের চারা, তবলা, একতারা, বাঁশি থেকে শুরু করে কাপড়ের সুই সুতো হরদম কেনা-বেচা হয়।