থালা নিয়ে রাস্তায় আন্দোলনরত পাটকল শ্রমিকরা

খুলনা, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা | 2023-08-25 12:17:56

খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের শ্রমিকরা বকেয়া মজুরির দাবিতে রমজানের প্রথম দিনে ইফতারের আশায় থালা নিয়ে রাস্তা অবরোধ করেছেন।

মঙ্গলবার (৭ মে) বিকালে খুলনা নগরীর দৌলতপুর নতুন রাস্তা মোড়ে তিন ঘণ্টার রাজপথ ও রেলপথ কর্মসূচি অবরোধ পালন করেন শ্রমিকরা। এ কর্মসূচিতে অংশ নেন প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিল, ক্রিসেন্ট জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, স্টার জুট মিল, আলিম জুট মিল, ইস্টার্ন জুট মিল, খালিশপুর রাষ্টায়ত্ত পাটকলের কয়েক হাজার শ্রমিক।

প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক রহমান মিয়া বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ‘পবিত্র রমজান শুরু হয়েছে। আর আমাদের কারো ঘরে একটা দানা নেই। ১১ সপ্তাহ ধরে টাকা পাই না। ভোরে পানি খেয়ে রোজা রাখছি। এখন যদি কেউ ইফতার দেয়, সেই আশায় এখানে  আসছি।’

অবরোধে পাটকল শ্রমিকরা/ ছবি: বার্তা২৪.কম

 

ক্রিসেন্ট জুট মিলের শ্রমিক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘রোহিঙ্গারা এদেশের মানুষ না, তারাও ভালো আছে। তাদের জন্যও খাবার, পোশাক বরাদ্দ হয়। আর আমরা এদেশের মানুষ, পাটের মিলে কাজ করে এই রোজার সময়ও অভূক্ত থাকি সেহরি আর ইফতারে। আমাদের দেখার কেউ নেই।’

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ- নন সিবিএ শ্রমিকলীগের খুলনা যশোর অঞ্চলের আহ্বায়ক মুরাদ হোসেন বার্তা২৪.কম-কে জানান, ‘বকেয়া মজুরি পরিশোধ ও মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ৯ দফা দাবিতে গত ২ এপ্রিল থেকে ৭২ ঘণ্টা পাটকলে ধর্মঘট করেন শ্রমিকরা। এরপর ১৫ এপ্রিল থেকে তারা ৯৬ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু করেন। ১৫ এপ্রিল রাতে ঢাকায় শ্রম প্রতিমন্ত্রী ও বিজেএমসি চেয়ারম্যানের সাথে বৈঠকের পর তাদের আশ্বাসে শ্রমিক নেতারা কর্মসূচি স্থগিত করেন।

ইফতারের আশায় থালা নিয়ে বসে আছেন শ্রমিকরা/ ছবি: বার্তা২৪.কম

 

ঐ বেঠকে ২৫ এপ্রিলের মধ্যে বকেয়াসহ মজুরি পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। এরপর এক সপ্তাহের সময় নিয়েও মজুরি প্রদান করা হয়নি। ফলে বাধ্য হয়েই শ্রমিকরা মিলের উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছেন। মঙ্গলবার আবার রোজা রেখে তারা তিন ঘণ্টা অবরোধ করেছেন।

রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ পরিষদের আহ্বায়ক সোহরাব হোসেন বলেন, ‘ক্ষুধার যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়েই শ্রমিকরা রাজপথে নেমে এসেছেন। তারা তো ভিক্ষা চাইছে না, নায্য পাওনা চাইছেন। দাবি না মানলে সবাই মিলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’

বিজেএমসির খুলনা আঞ্চলিক সমন্বয়কারী সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘সার্বিক অবস্থা বিজেএমসির প্রধান কার্যালয়ে জানানো  হয়েছে। কিন্তু এখনও অর্থ সংস্থান হয়নি। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পর এ সমস্যা সমাধান হবে।’

তিনি জানান, খুলনার ৯টি পাটকলের শ্রমিকদের আট থেকে ১১ সপ্তাহের মজুরি ও কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের তিন থেকে চার মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। সব মিলিয়ে এ অঞ্চলের পাটকলগুলোর শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের ৬৫ থেকে ৭০ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।

এদিকে, গত ৫ মে বিজেএমসি থেকে একটি চিঠি দিয়েছে রমজানের শুরুতেই মিলগুলোর নিজস্ব অর্থায়নে এক সপ্তাহের মজুরি প্রদান করতে বলা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর