খুলনায় গরিবের মার্কেটে ধনীদের কেনাকাটা

খুলনা, জাতীয়

মানজারুল ইসলাম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, খুলনা | 2023-09-01 16:45:39

সাধ আর সাধ্যের সমন্বয়হীনতার মাঝেও স্বল্প আয়ের মানুষ ঈদ বাজারে সীমিত বাজেটে পুরো পরিবারের কেনাকাটা করেন। দর কষাকষিতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা বেশ এগিয়ে থাকলেও এবার তাদের পথে বাধা হচ্ছেন বিত্তবানরা। খুলনার দরিদ্রদের অধিকাংশ মার্কেটে ধনীরা হানা দিচ্ছেন।

সোমবার (২৭ মে) খুলনার মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলো ঘুরে দেখা যায়, মধ্যবিত্ত ও নিন্ম আয়ের মানুষের মার্কেট হিসেবে পরিচিত নিক্সন মার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, বড় বাজার, হ্যানিম্যান মার্কেট, মশিউর রহমান মার্কেট, এস এম এ রব মার্কেট, কাজী নজরুল ইসলাম মার্কেট, হকার্স মার্কেট, এমনকি ফুটপাতের দোকানগুলোতেও বিত্তবানদের আনাগোনা। এতে অনেকটা বিপাকে পড়েছেন স্বল্প আয়ের মানুষেরা। এসব মার্কেটে দর কষাকষি না করে উচ্চবিত্তরা জিনিস কিনে নিচ্ছেন। এতে বিক্রেতারা সহজে পণ্যের দাম কমাচ্ছেন না। এ নিয়ে বিপদে পড়েছেন নিম্নবিত্তরা।

খুলনার বড় বাজারে পরিবারের জন্য ঈদের কেনাকাটা করতে আসা দিনমজুর রহমত আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘পোলাপানগো জন্যি কিছু কিনতে আইছি, কিন্তু বাজারে কিছু কেনার উপায় নাই। যেইটা ধরি সেইটাতেই দাম! তার উপরে বড়লোকরা এহন গরিবগো বাজারে কেনাকাটা করে। মার্কেটের বাইরে গাড়ি রাইখা কেনাকাটা করে। দোকানদার আমার কাছে একটা শার্টের দাম চাইছে ১২০০ টাকা, আমি ৫০০ কইছি। পাশে এক বড়লোক ১১০০ দিয়া শার্টটা কিনে নিয়া গেছে। এমন হইলে আমরা চলমু কেমনে!’

ইজিবাইক চালক আব্দুল হান্নান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘সাধ্য নেই যার, তার মনে হয় সাধও থাকতে নেই। এবার কেনাকাটা করতে এসে তাই মনে হচ্ছে। সব কিছুর যে দাম, তাতে গরিব কিনতে পারবে না। ঈদ তো এখন বড়লোকদের।’

নিক্সন মার্কেটের ফ্যাশন হাউজের মালিক আসাদ শেখ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আগে এখানকার বিপণিবিতানে শুধু মধ্যবিত্ত ও নিন্মবিত্তরা কেনাকাটা করতো। এ বছর দেখছি সব ধরনের ক্রেতারা আসছেন। আমাদের মার্কেটে অপেক্ষাকৃত কমমূল্যে কেনাকাটা করা যায়। আমরা যা দাম চাইছি, এবার অনেকেই দর কষাকষি ছাড়াই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। মনে হচ্ছে কিছুটা টাকা-পয়সাওয়ালা মানুষেরা এ মার্কেটে আসছেন। কারণ, এর আগে দর কষাকষি ছাড়া বিক্রি করতে পারতাম না।

প্রাইভেটকারে ঈদবাজার করতে আসা চাকরিজীবী ইমরান আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আগে নিউ মার্কেট, সোনাডাঙ্গা আবার শিববাড়ীর শোরুম থেকে কেনাকাটা করা হতো। এবার সব মার্কেটেই প্রচণ্ড দাম। আগে সেসব পোশাক দুই হাজারে পেতাম সেসব এবার দাম চাচ্ছে পাঁচ হাজারের মতো। তাই নিক্সন মার্কেটের দিকেও একটু আসলাম। একটু ঘুরে-ফিরে কিনলে এখানেও ভালো জিনিস পাওয়া যায়।

নিম্ন আয়ের মানুষদের ঈদ উদযাপনের গল্পতে বিত্তবানরা বাধা হয়ে দাঁড়ানোর কারণে অনেকেই মার্কেট করতে এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। নামীদামি শপিং মল আর রঙিন বিপণিবিতান এড়িয়ে তারা কোনো রকমে নতুন পোশাক কিনতে পারলেই খুশি হতো।

এ সম্পর্কিত আরও খবর