দীর্ঘ যাত্রার কারণে শরীরের ব্যথা আর জোর পূ্র্বক খাবার খাওয়ানোর কারণে পেটের অসুখে ভুগছে রাজধানীর হাটের গরু। শনিবার (১০ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর দিয়া বাড়ি গরুর হাট ঘুরে এবং ভেটেরিনারি মেডিকেল টিমের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য পাওয়া যায়।
রাজধানীর দিয়া বাড়ি গরুর হাটে মূলত উত্তরা, টঙ্গী, দক্ষিণ খান এবং আশপাশের ক্রেতা বেশি। সকালের তুলনায় বিকেলে হাট জমে উঠে। আর শনিবার সকাল থেকেই রোদের তাপও ছিল কড়া। তাই গরমে ক্রেতা বিক্রেতাদের অবস্থা দূর্বিষহ।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জাহাঙ্গীর হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ৯ আগষ্ট থেকে কোরবানির পশুর জন্য এই স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে অধিদপ্তর। ১১ আগষ্ট ২০১৯ পর্যন্ত সেবা প্রদান করা হবে।
তিনি বলেন, শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত ১৮ টি গরুকে সেবা প্রদান করা হয়েছে। গরুগুলো ব্যথাজনিত এবং পেট ফাঁপাজনিত সমস্যায় ভুগছে। তাদেরকে প্রাথমিক সেবা এবং বিশ্রাম দেয়ার জন্য ব্যাপারীদের বলা হয়েছে।
একই মেডিকেল টিমের উপ সহকারী প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হানিফ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, গরুগুলোকে যখন পরিবহন করে নিয়ে আসা হয়, তখন বেশ কষ্ট দেয়া হয়। দেখা যাচ্ছে, যেন ট্রাকে ১৫টি গরু পরিবহন করা যাবে, সেখানে চাপাচাপি করে ২০ টি রাখা হয়। এছাড়াও দীর্ঘ পথে বসার সুযোগও পায় না গরু। ফলে তাদের পেশিতে ব্যথা হয়।
তিনি বলেন, এছাড়াও হাটে আসার পরও ব্যাপারীরা বিক্রির জন্য তাদের বসতে দেয় না। ক্রেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সব সময় দাঁড় করিয়ে রাখে। ফলে একসময় ব্যথা সহ্য করতে না পেরে বসে যায় বা শুয়ে পড়ে। তখন ব্যাপারীদের হুঁশ হয়।
এছাড়াও হাটের পরিবেশ গরুর জন্য স্বাস্থ্যকর নয় বলে জানান তিনি। বলেন, পরশু রাতে বেশ বৃষ্টি হয়েছে। তখন গরুগুলোকে ভিজতে হয়েছে। আবার আজকে প্রচণ্ড রোদ। এই হাটে গরুদের জন্য কোন ছাউনির ব্যবস্থা নাই ফলে রোদ বৃষ্টিতে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, পরিবহনের সময় যেমন দাঁড় করিয়ে রাখা হয়, তেমনি জোরপূর্বক খাওয়ানো হয়। এমনকি বাঁশের নল দিয়ে এবং চোঙ্গা দিয়ে খাওয়ানো হয়। এবং খাবার হজমের সময় দেয়া হয় না। ফলে পেটের ফাঁপা রোগ হয়েছে।
এ কারণেই গত দুই দিনে দিয়া বাড়ি হাটে দুটি গরুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি। এই হাটে সিরাজগঞ্জ, পাবনা এবং রংপুরের গরু বেশি বলে জানান কর্মকর্তারা।
এই দিকে দিয়া বাড়ি পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্থানে পানি জমে আছে। কাঁদায় পানিতে একাকার হয়ে আছে বেশ কিছু স্থান। যা ক্রেতা বিক্রেতা এবং গরুর জন্য স্বাস্থ্যসম্মত নয়।