ভবিষ্যতে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় করতে এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে একসঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ ও সুইডেন। সোমবার (১৬ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় রাজনৈতিক পরামর্শের জন্য আয়োজিত দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রথম দফার বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে দুই দেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (দ্বিপাক্ষিক ও কনস্যুলার) রাষ্ট্রদূত কামরুল আহসান বাংলাদেশের পক্ষে এবং সুইডেনের পক্ষে দেশটির পররাষ্ট্র দফতরের এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের প্রধান সিসিলিয়া রুথ্রম-রুইন এ বৈঠকে নেতৃত্বে দেন।
দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে নিয়মিত পরামর্শ অনুষ্ঠানের জন্য ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে স্টকহোমে একটি সমঝোতা স্বাক্ষর করেন।
প্রথম দফায় পরামর্শের পরিবেশটি সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে শুরু হয় এবং এতে দ্বিপক্ষীয় ইস্যু, পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলোর বিস্তৃত পরিসীমা অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের নির্ধারিত গ্র্যাজুয়েশন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে সুইডেনের আগ্রহের বিবেচনায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সুস্পষ্টভাবে আলোচনায় আসে।
১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এবং পরবর্তীকালে যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠনের জন্য সুইডেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ওলোফ পালমে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে সমর্থন দেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সুইডেন এক দশক ধরে বাংলাদেশের অবিচ্ছিন্ন আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে আসছে। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে সুইডেনের উন্নয়ন সহযোগিতার কৌশলটি রূপরেখা অনুযায়ী এগিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য সুইডেনের রাজনৈতিক এবং মানবিক সহায়তার প্রশংসা করা হয় বৈঠকে। আর রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে উদারতা দেখিয়েছে, তার প্রশংসা করেন সিসিলিয়া রুথ্রম-রুইন। তারা মিয়ানমারের পক্ষ থেকে জবাবদিহিতা চাওয়ার এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে মানবিক ও রাজনৈতিক সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেন।
বৈঠকে সুইডেনের গ্লোবাল ডিল উদ্যোগ, এসডিজি বাস্তবায়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, সুশাসন এবং মানবাধিকার, অভিবাসনের জন্য গ্লোবাল কম্প্যাক্ট ফর মাইগ্রেশন (জিসিএম), শান্তিরক্ষা ও শান্তি বিল্ডিং, সন্ত্রাস ও হিংস্র উগ্রবাদ মোকাবিলা, পারস্পরিক স্বার্থের আঞ্চলিক বিষয় এবং জাতিসংঘ সংস্কারসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়।
পরের দফার বৈঠক পারস্পরিক সুবিধাজনক তারিখে স্টকহোমে অনুষ্ঠিত হবে।