ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের প্রভাব পড়েছিল সারা বাংলাদেশে। প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে নেয়া হয়েছিল বাড়তি প্রস্তুতি।
আকাশ পথ থেকে শুরু করে নদী পথে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছিল। ফলে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অনেকটাই থেমে যায়। এর প্রভাব পরে রাজধানীর সদরঘাটেও। লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হলেও যাত্রী সংকটে কর্মচঞ্চল হয়ে ওঠেনি এ এলাকা। রোববার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যা নাগাদ বুলবুলের প্রভাবমুক্ত হয় বাংলাদেশ। আর বাংলাদেশে বুলবুল আঘাত হানে শনিবার (১১ নভেম্বর) দিনগত রাতে। ফলে সোমবার পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। তবে সদরঘাটের কর্মচঞ্চল হয়ে উঠতে আরো দুই-এক দিন সময় লাগবে।
সোমবার সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সদরঘাট এলাকা রৌদ্রোজ্জ্বল, নদী শান্ত। কিন্তু তারপরও মানুষের তেমন চাপ নেই। শান্ত নদীতে অল্প সংখ্যক ডিঙ্গি নৌকা চলাচল করছে। যা অন্য সময়ের তুলনায় অনেক কম। খুব বেশি যাত্রীকে নদী পার হতেও দেখা যায়নি। তবে যাত্রী না থাকলেও ডিঙ্গি নৌকার ঘাটগুলোতে অসংখ্য নৌকা এসে জড়ো হয়েছে।
সদরঘাটের গুদারা ডিঙ্গি নৌকাঘাটের পরিচালক ফারুক বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ঝড়ের কারণে গত দুই দিন লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল। এ সময় লঞ্চের সিরিয়াল সব উল্টাপাল্টা হয়ে যায়। এর প্রভাব পড়েছে ডিঙ্গি নৌকার ঘাটে। ঘাটে অসংখ্য নৌকা আছে, তবে যাত্রী নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক আরো তিন দিন সময় লাগতে পারে।
সদরঘাটের লালকুঠির ঘাট থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশে যথারীতি ছেড়ে গেছে লঞ্চ। তবে যাত্রী কম। যাত্রী না থাকলেও নিয়ম অনুযায়ী লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে।
লালকুঠির ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর দিনেশ কুমার সাহা জানান, লালকুঠি ঘাট থেকে সিডিউল অনুযায়ী ৩০ মিনিট পর পর ছেড়ে গেছে লঞ্চ। সকাল থেকে আটটি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক হলেও যাত্রীর চাপ অনেকটাই কম। হয়তো আগামী দুই দিনের মধ্যে যাত্রীর চাপ স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
সদরঘাট এক নম্বর টার্মিনালের টিকিট কাউন্টারের শুল্ক আদায়কারী সম্রাট হোসেন বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, দুই দিন পর আজ সকাল থেকে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। তবে যাত্রী সংখ্যা অনেক কম। এখানে অনেকগুলো ঘাটে প্রবেশের টিকেট কাউন্টার রয়েছে। সেগুলোর অবস্থা বলতে পারব না। আমার এ কাউন্টারের কথা যদি বলি, তাহলে ঘূর্ণিঝড়ের আগে যে পরিমাণ টিকিট বিক্রি হতো, আজ সকালে তার ২০ শতাংশের মত বিক্রি হয়েছে। যাত্রীর চাপ স্বাভাবিক হতে আরো দুই দিন সময় লাগতে পারে।
সদরঘাট ট্রাফিক পুলিশ ইন্সপেক্টর রিয়াজ মোহাম্মদ বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, ঝড়ের কারণে গত দুই দিন লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল। আজ থেকে স্বাভাবিক হয়েছে। ভোর ৬টা থেকে এক নম্বর টার্মিনাল থেকে ১৫টি লঞ্চ ছেড়ে গেছে। যা অন্যান্য দিনের মতোই।
উল্লেখ্য, প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ৮০টির মত ছোট বড় লঞ্চ সদরঘাটে এসে ভেড়ে। আবার একই ভাবে ৮০টির মত ছোট বড় লঞ্চ এ ঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে যায়। পাশাপাশি বুড়িগঙ্গার দুই পাশে অর্থাৎ কেরানীগঞ্জের সঙ্গে পুরান ঢাকার যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছে এ ঘাট।