হলি আর্টিজান হামলার মামলায় আদালতের রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। রায়ের পর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন বলেন, এ রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। এখন এ রায়ের বিরুদ্ধে আইনগত করণীয় হিসেবে উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। আমরা আপিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাই এখনই এ বিষয়ে মূল্যায়ন করা ঠিক হবেনা।
মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, মামলায় যে সাক্ষ্যগুলো উপস্থাপন করা হয়েছে, এগুলো ত্রুটিমুক্ত সাক্ষ্য ছিলো কিনা, তা নিয়ে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
এর আগে বুধবার (২৭ নভেম্বর) বেলা ১২টা ১৭ মিনিটে ঢাকার সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন। হামলার ৩ বছর ৪ মাস পর এ রায় ঘোষণা করা হলো।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- রাজীব গান্ধী, রাকিবুল হাসান রিগ্যান, হাতকাটা সোহেল মাহফুজ, হাদিসুর রহমান সাগর, রাশেদ ইসলাম ওরফে আবু জাররা ওরফে র্যাশ, শরিফুল ইসলাম ওরফে খালেদ ও মামুনুর রশীদ ওরফে রিপন।
রায় ঘোষণার জন্য কারাগারে আটক থাকা ৮ আসামিকেই আদালতে হাজির করা হয়েছিল। ১২টা ৩৪ মিনিটে জঙ্গিদের নিয়ে প্রিজন ভ্যান আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করে কারাগারে উদ্দেশে রওনা হয়।
রায় দেওয়ার আগে চার্জশিটের ২১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে ট্রাইব্যুনাল।
২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে (স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ) হামলা চালায় জঙ্গিরা। ওই হামলায় ১৭ বিদেশিসহ ২০ জনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে তারা।
নিহতের মধ্যে নয়জন ইতালি, সাতজন জাপানি ও একজন ভারতীয় ছিলেন।
এর আগে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের ওপর গ্রেনেড হামলা চালায় জঙ্গিরা। গ্রেনেড হামলায় ডিবি পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি) রবিউল ইসলাম ও বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাউদ্দিন আহমেদ নিহত হন।
পরদিন সকালে যৌথ বাহিনী কমান্ডো ‘অপারেশন থার্ডারবোল্ট’ নামক অভিযান চালায়। এতে পাঁচ হামলাকারী নিহত হয়। অভিযানে রেস্তোরাঁর প্রধান শেফ সাইফুল ইসলাম মারা যান। গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান রেস্তোরাঁটির সহকারী শেফ জাকির হোসেন।
২০১৬ সালের ৪ জুলাই নিহত ৫ জঙ্গিসহ অজ্ঞাতদের আসামি করে গুলশান থানায় সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়।ঘটনায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে জীবিত আটজনের বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৩ জুলাই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। বাকি ১৩ জন মামলা তদন্ত চলাকালীন বিভিন্ন সময় মারা যান।