সিলেটের বাজারে অবাধে বিক্রি হচ্ছে অবৈধ ফুড সাপ্লিমেন্ট, যদিও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী, চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্রে ফুড সাপ্লিমেন্টের কথা লিখতে পারবেন না।
ঔষধের দোকানেও ফুড সাপ্লিমেন্ট বিক্রিতে বিধি-নিষেধ আছে। তবে এসব নিষেধ মানছেন না সিলেটের চিকিৎসক ও ঔষধ বিক্রেতারা। প্রকাশ্যেই বাজারে অবৈধ ফুড সাপ্লিমেন্ট বিক্রি করছেন তারা। এতে রোগীদের যেমন চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে তেমনি অপ্রয়োজনীয় ফুড সাপ্লিমেন্টে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান বাজারে যেসব ফুড সাপ্লিমেন্ট রয়েছে এর বেশির ভাগই নিম্নমানের। নিয়মিত মাছ, মাংস, ডিম, শাকসবজি ও ফলমূলসহ পুষ্টিকর খাবার খেলেই মানুষের পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়। কিন্তু বাজারে যে প্রচলিত ফুড সাপ্লিমেন্ট বিক্রি হচ্ছে, তা মানুষের আদৌ প্রয়োজন নেই।
অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ এসব ফুড সাপ্লিমেন্ট বিক্রিতে ডাক্তাররা ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কমিশন পান আর ঔষধ বিক্রেতা পান ২০ শতাংশ কমিশন। সিলেট নগরের বিভিন্ন ফার্মেসি ঘুরে বিভিন্ন ধরনের ফুড সাপ্লিমেন্ট বিক্রি হতে দেখা গেছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো ওমেগা-৩, স্টার, স্টার নিউব্রেক, বনবিয়ান ট্যাবলেট, ট্যাবলেট ম্যাগবিয়ান, ওস্টার, নিওব্রেক, নভেক্স, ইউট্রি সোপ, বেলকিন সোপ, রেভিকাল ট্যাবলেট, ক্রিয়েটিন পাউডার, ক্যাপসুল বায়োমেগা, ক্যাপসুল নোভাপ্লেক্স, রয়েল, অভাসিড ক্যাপসুল, ভালিডো ক্যাপসুল, ল্যাকটোগিন ক্যাপসুল, উনেক্স ক্যাপসুল, ক্যাপসুল লেগুম-৭৫০, জয়েন্ট গ্লু, এম-লিনা ও ড্যানজোলার সোপ, ক্যাপসুল রেটিনেক্স, ক্যাসুল এইস পাওয়ার ও ট্যাবলেট জিসিএম প্লাস।
সিলেট জেলা কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতির সভাপতি মইনুল হক চৌধুরী বলেন, ফুড সাপ্লিমেন্ট বিক্রি অবৈধ। কেউ যাতে তা বিক্রি না করে সেজন্য আমরা প্রত্যেক ফার্মেসিতে চিঠি দিয়েছি। সংগঠন থেকে স্টিকার তৈরি করেও ফার্মেসিগুলোকে ফুড সাপ্লিমেন্ট সম্পর্কে সর্তক করা হয়েছে। এরপরও যদি কেউ ফুড সাপ্লিমেন্ট বিক্রি করে তাহলে প্রশাসন যাতে তার বিরুদ্ধে আইনমত ব্যবস্থা নেয় । এক্ষেত্রে আমরা তাদের সাহায্য করবো।
তিনি বলেন, ফুড সাপ্লিমেন্টে স্বাস্থ্যের কোনো উপকার হয়না। এগুলোর বেশিরভাগ নকল। এসব গ্রহণ করলে জটিল ও কঠিন রোগ হলে পারে।
এ প্রসঙ্গে ঔষধ প্রশাসন সিলেটের ড্রাগ সুপার সফিকুর রহমান জানান, কারো ফুড সাপ্লিমেন্টের উৎপাদন ও বিক্রি করার সুযোগ নেই। এসব ফুড সাপ্লিমেন্ট বিক্রি বন্ধ করতে আমরা সিলেটের ফার্মেসিগুলোতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করি। একাধিক অভিযানে কয়েকটি ফার্মেসিকে জরিমানা করা হয়েছে।
সিলেট জেলা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ঔষধ প্রশাসনের তালিকার বাইরের বাজারে যা ঔষধ নামে বিক্রি হয় তা অবৈধ। এসব অবৈধ ফুড সাপ্লিমেন্ট বন্ধে আমরা জেলা প্রশাসনকে নিয়ে প্রতি সপ্তাহে সিলেটে অভিযান পরিচালনা করি। এ সকল ফুড সাপ্লিমেন্ট স্বাস্থ্যের জন্য তেমন প্রয়োজনীয় নয়।