করোনাকালীন সঙ্কটে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থা, সংগঠন দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষের সহায়তায় এগিয়ে আসছেন। অভাবী মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন যার যার অবস্থান থেকে।
এরই ধারাবাহিকতায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজে অধ্যয়নরত জয়পুরহাট জেলার স্থানীয় ৩৫০ জন শিক্ষার্থী মিলে অসহায় মানুষের সাহায্যের লক্ষ্যে 'জয়পুরিয়ান ট্রাস্ট'-এর অধীনে 'জয়পুরিয়ান ফান্ড' গঠন করা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ১৫'শ পরিবারকে খাদ্য সামগ্রী দিয়ে সহায়তার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তারা।
সোমবার (৬ এপ্রিল) 'যতদিন করোনা, ততদিন আমরা' এই শ্লোগানকে সামনে রেখে কার্যক্রম শুরুর দ্বিতীয় দিনে জয়পুরহাট জেলার ৫টি উপজেলায় প্রায় ১০০ পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে ট্রাস্টের সদস্যরা।
প্রতিদিন প্রতি উপজেলার ৪ জন করে মোট ২০ জন স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থী নিজ নিজ গ্রামের ৫টি করে মোট ১০০ পরিবারকে সাহায্য পৌঁছে দেন। প্রতিদিন প্রতিজন শিক্ষার্থীর মাধ্যমে ৫টি করে ভিন্ন ভিন্ন পরিবার খাদ্য সামগ্রী পান। এভাবে পুরো জেলায় অন্তত ১০০ পরিবার প্রতিদিন সাহায্য পাচ্ছেন।
খাদ্য সামগ্রী হিসেবে পরিবারগুলোকে দেওয়া হচ্ছে, সাড়ে ৩ কেজি চাল, আধা কেজি ডাল, আধা লিটার সয়াবিন তেল, লবণ আধা কেজি, পেয়াজ ২৫০ গ্রাম, কাঁচামরিচ ২৫০ গ্রাম। এছাড়াও বিভিন্ন গ্রামে সেচ্ছাসেবীরা মাস্ক, ওষুধসহ কিছু বাড়তি জিনিস দিয়ে সহায়তা করছেন।
এ বিষয়ে ট্রাস্টের চিফ কো-অর্ডিনেটর রানা মাসুদুর রহমান বলেন, করোনা মোকাবেলায় দলবেঁধে সহায়তা সামগ্রী বিতরণের বিদ্যমান পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে আমরা একটি নতুন পদ্ধতিতে সহায়তা সামগ্রী বিতরণ কর্মসূচি সম্পন্ন করছি। আমাদের পদ্ধতি অনুযায়ী, ট্রাস্ট কর্তৃক প্রদানকৃত নির্ধারিত অংকের টাকা ডিজিটাল পেমেন্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মোবাইল অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়। এরপর ট্রাস্ট কর্তৃক নির্ধারিত পণ্য কিনে তা প্যাকেটজাত করে প্রকৃত অসহায়দের কাছে বিতরণ করেন তারা। এই মহৎ কাজ বর্তমান ও পরবর্তী প্রজন্মের জয়পুরিয়ানদের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
ট্রাস্টের জয়েন্ট চিফ কো-অর্ডিনেটর এবিএম ইমরুল হাসান সৈকত বলেন, 'আমরা দরিদ্র অসহায় মানুষদের মাঝে সহায়তা প্রদানের এই উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে একটা ঐক্য গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি। আমরা বিশ্বাস করি, মানবিক এই কাজের মাধ্যমে পারস্পরিক বন্ধন আরো নিবিড় ও শক্তিশালী হবে।
তিনি আরও বলেন, এমন অনেক মানুষ আছেন যারা চক্ষু লজ্জায় নিজের সমস্যার কথা বলতে পারেন না আমরা কর্মহীন হয়ে পরা এসব মানুষদেরকেও সহায়তা করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।
ট্রাস্টের সদস্য ও তেজগাঁও কলেজের শিক্ষার্থী তানভীর রহমান বলেন, আমরা যারা বিতরণের দায়িত্ব নিয়েছি তারা নিজের গ্রামের ২০টি পরিবারকে এসব সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছি। এতে গ্রামের বাইরে যেতে হচ্ছে না। তাই করোনার ঝুঁকিও কম থাকছে।