চৈত্র মাসের ৩০ তারিখ চলছে। আজ সোমবার (১৩ এপ্রিল) বাংলার চিরায়ত উৎসব চৈত্র সংক্রান্তি। আবার এদিন বাংলা বর্ষেরও শেষ দিন। আগামী মঙ্গলবার বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। ১৪২৬ সালকে বিদায় জানিয়ে (১৪ এপ্রিল) শুরু হবে বাংলার নতুন বছর ১৪২৭। একই সঙ্গে বসন্তকে বিদায় দিয়ে প্রকৃতি স্বাগত জানাবে নতুন ঋতু গ্রীষ্মকে।
ধারণা করা হয়, চৈত্র থেকে বর্ষার প্রারম্ভ পর্যন্ত সূর্যের যখন প্রচণ্ড উত্তাপ থাকে তখন সূর্যের তেজ প্রশমন ও বৃষ্টি লাভের আশায় কৃষিজীবী সমাজ বহু অতীতে চৈত্র সংক্রান্তির উদ্ভাবন করেছিল।
কথিত আছে চৈত্র সংক্রান্তিকে অনুসরণ করেই পহেলা বৈশাখ উদযাপনের এত আয়োজন। তাই চৈত্র সংক্রান্তি হচ্ছে বাঙালির আরেক বড় উৎসব।
আবহমান বাংলার চিরায়ত নানা ঐতিহ্যকে ধারণ করে আসছে এই চৈত্র সংক্রান্তি। এদিন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা শাস্ত্র মেনে স্নান, দান, ব্রত, উপবাস করে কাটান। নিজ নিজ বিশ্বাস অনুযায়ী অন্য ধর্মাবলম্বীরাও নানা আচার অনুষ্ঠান পালন করেন।
চৈত্র সংক্রান্তি এক সময় গ্রামীণ জনপদের প্রধান উৎসব হলেও কালের প্রবাহে একসময় নাগরিক জীবনেও স্থান করে নেয়। এ উপলক্ষে দেশজুড়ে এখনো চলে নানা ধরনের মেলা, উৎসব। হালখাতার জন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সাজানো, লাঠিখেলা, গান, আবৃত্তি, সঙযাত্রা, রায়বেঁশে নৃত্য, শোভাযাত্রাসহ নানা অনুষ্ঠান।
এদিকে, বিশ্বব্যাপী ছড়ি পড়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশেও রয়েছে। তাই এই উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জনসমাগম এড়াতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী এবারের বৈশাখে পান্তা ইলিশসহ কোনো ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন থাকছে না। হচ্ছে না বৈশাখী মেলাও। সারাদেশে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলছে। আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে এই ছুটি। এই অবস্থায় চৈত্র সংক্রান্তি উপলক্ষে কোন আনুষ্ঠানিকতা থাকছে না এবার।
তবুও মঙ্গলবার সকালে ভোরের প্রথম আলো রাঙিয়ে দেবে বাংলার নতুন বছরের নতুন স্বপ্ন। তাই বাংলার নতুন বছরে যেন সুদিন ফিরে আসে এ প্রত্যাশাই করছেন বাঙালিরা।