গাজীপুরের শ্রীপুরে বাড়িতে লাগা আগুনে পুড়ে প্রাণ গেল শিকলবন্দী এক মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর। এ ঘটনায় পুড়ে গেছে বাড়ির ৮টি মাটির কক্ষ।
শনিবার (২৫ এপ্রিল) রাতে উপজেলার কেওয়া পশ্চিম খণ্ড দারোগারচালা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রোববার (২৬ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
নিহত আছমা খাতুন (৩২) ওই এলাকার আব্দুল কাদেরের মেয়ে। তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন।
শ্রীপুর ফায়ার স্টেশন কর্মকর্তা রাম প্রসাদ পাল বার্তা২৪.কমকে জানান, গত রাত সাড়ে ১২টায় ওই বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে ৮ মিনিটে সেখানে পৌঁছে যায় তাদের ২টি ইউনিট। পরে ১টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। রাত ২টার দিকে আগুন পুরোপুরি নেভে।
তিনি আরও জানান, বাড়িটি মাটির তৈরি। উপরে টিনের ছাউনি। একটি কক্ষে গত ২ মাস ধরে পায়ে শিকল বাঁধা অবস্থায় বন্দী ছিলেন আছমা। আগুন নেভানো শেষে দেখা যায় মুখমণ্ডলসহ তার সমস্ত শরীর পুড়ে গেছে। এছাড়া ওই বাড়ির ৮টি কক্ষ ও মালামাল পুড়ে গেছে।
বাড়ির লোকজন ওই নারীকে উদ্ধারের চেষ্টা করেছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি জানান, বাড়িতে তেমন কেউ ছিলেন না। আগুন লাগার পর বাবা আব্দুল কাদের অচেতন হয়ে যান।
এদিকে আগুনের সূত্রপাত সম্পর্কে কোনো ধারনা পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে রাম প্রসাদ পাল জানান, সব কক্ষে লোকজন বসবাস করত না। মাটির কয়েকটি কক্ষে শুকনো পাতা রাখা ছিল। বাড়ির ৬টি কক্ষ সংযুক্ত। অপর দুটি পৃথক। অগ্নিকাণ্ডে আনুমানিক ৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
নিহত আছমার ছোট ভাই হাবিবুর রহমান বার্তা২৪.কমকে জানান, আসমার বিয়ে হয়েছিল ময়মনসিংহের গফরগাঁও এলাকায়। একটি মেয়েও হয়েছিল। কিন্তু ৪-৫ বছর আগে হঠাৎ মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন তিনি। পরে স্বামী সন্তানকে রেখে তাকে ছেড়ে দেন। এরপর থেকে আছমা বাবার বাড়িতেই থাকতেন।
হাবিবুর রহমান আরও জানান, প্রতিনিয়ত ওষুধ না খেলে আছমা পাগলামি করতেন। বছরের এই সময়টাতে পাগলামি বেড়ে যেত। গত একমাস ধরে পুরোপুরি ভারসাম্যহীন ছিলেন তিনি। করোনা ভাইরাসের কারণে ডাক্তার দেখানো যাচ্ছিল না। তাই তার পায়ে শিকল বেঁধে ঘরে আটকে রাখা হতো। আগুন লাগার পর কারও মাথা ঠিক ছিল না। আছমা ঘরে ছিল নাকি তাকে বের করা হয়েছে এটি নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়। এর এক পর্যায়ে আগুনে পুড়ে মারা যান তিনি।