প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রভাব পড়েছে দেশের সর্ববৃহৎ যৌনপল্লী রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া পতিতা পল্লীতেও। সংক্রমণ এড়াতে প্রশাসন গত ২০ মার্চ থেকে এই যৌনপল্লীতে লকডাউন ঘোষণা করে। অবরুদ্ধ হয়ে যায় পল্লীর প্রায় ৪ হাজার বাসিন্দা। এমন মানবিক বিপর্যয়ে এসব মানুষদের পাশে এগিয়ে আসে প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা।
লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই বাংলাদেশ পুলিশ গোয়ালন্দ থানার নিয়ন্ত্রণে চলে যায় পল্লীটি। তাদের দেখাশোনা ও কয়েক দফায় ত্রাণের ব্যবস্থাও করে পুলিশ। তাছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য ও প্রশাসন এগিয়ে আসেন অবরুদ্ধ এ সকল যৌনকর্মীদের পাশে।
তবে কয়েক দফায় ত্রাণ বিতরণ করা হলেও খুব একটা ভালো অবস্থায় নেই বলে জানান যৌনকর্মীরা। পরনির্ভরশীল হয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে সরকারি-বেসরকারি ত্রাণের দিকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক যৌনকর্মী বার্তা২৪.কমকে বলেন, পরিবার-পরিজন নিয়ে এই পল্লীতে প্রায় ৪ হাজারের মতো মানুষ বাস করে। কিন্তু ত্রাণ পাচ্ছে মাত্র ১৩শ জন। যারা পাচ্ছে না তাদের ওই ১৩শ জনের উপর নির্ভর করে বেঁচে থাকতে হচ্ছে। ত্রাণ না পৌঁছালে না খেয়েই থাকতে হবে তাদের।
এ সময় তারা আরো জানান, শুধু ত্রাণ দিয়েই কি জীবন চালানো সম্ভব! ব্যক্তিগত আরো কত জিনিসের প্রয়োজন হয়। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া বন্ধ। টাকার অভাবে ওষুধও কিনতে সম্ভব হচ্ছে না।
গোয়ালন্দ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আশিকুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, ২০ মার্চ এখানে লকডাউন ঘোষণা করার পর থেকেই যৌনকর্মীদের মানবিক দিকটা বিবেচনা করে বাংলাদেশ পুলিশ ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি হাবিবুর রহমান চার দফায় ১৩শ জনের মধ্যে খাদ্য-সামগ্রী ও ঈদ উপহার বিতরণ করেছেন। আর দুয়েক দিনের মধ্যেই আরো ৯ টন চাল বিতরণ করা হবে।
তাছাড়া যৌনকর্মীদের কষ্টের কথা ভেবে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান লকডাউন শুরুর মাস থেকে যতদিন পর্যন্ত লকডাউন থাকবে ততদিন সকল বাড়ি ভাড়া না নেয়ার জন্য বাড়ির মালিকদের বলে দিয়েছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবায়েত হায়াত শিপলু বার্তা২৪.কমকে বলেন, ১৩শ যৌনকর্মীদের মাঝে সরকারি পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। তাছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য ও বিভিন্ন এনজিওগুলো নগদ অর্থ ও খাদ্য-সামগ্রী বিতরণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ২৫০০ করে টাকাও এই পল্লীর ২০০ জন পেয়েছে।