বাঙ্গি চাষ করে হাসি ফুটেছে কৃষক রবিউল ইসলামের মুখে। কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বলিদাপাড়া মাঠপাড়ার এ কৃষক বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, লাল শাকের পাশাপাশি এক বিঘা জমিতে বাণিজ্যিকভাবে বাঙ্গি চাষ করে লাভবান হয়েছেন।
এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাঙ্গির ফলনও বেশি হয়েছে। তবে গেল রমজানে প্রতি পিস বাঙ্গি ৫০-৬০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। এখন ক্ষেত থেকে প্রতি পিস বাঙ্গি বিক্রি হচ্ছে মাত্র ২০-৩০ টাকায়।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) বিকেলে বলিদাপাড়া মাঠপাড়ার মাঠে গিয়ে দেখা যায় ক্ষেত থেকে বাঙ্গি সংগ্রহ করতে ব্যস্ত রবিউল। তার ক্ষেতের যেদিকে দু’চোখ যায়, সে দিকে কেবলই দিগন্ত জোড়া সবুজ-হলুদের সংমিশ্রনে চৈত্রের মৌসুমি ফল বাঙ্গির সমারোহ।
বাঙ্গি চাষি রবিউল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমার এক বিঘা জমিতে বেগুন, আরেক বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়া, কিছু জমিতে লাল শাকের পাশাপাশি এক বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছি। প্রায় দেড় মাস নিবিড় পরিচর্যার পর ক্ষেত থেকে বাঙ্গি তুলতে শুরু করি। এখনো মাঠ থেকে বাঙ্গি তুলে বিক্রি করছি।
তিনি বাঙ্গি বিক্রি করে অল্প সময়ে বেশ লাভবান হয়েছেন বলেও জানান। তিনি বলেন, মৌসুমের শুরুতে ছিল রমজান। তাই সে সময় বাজারে বাঙ্গির দাম ভালো পেলেও তিন-চার সপ্তাহের মধ্যে সে দাম অনেকটাই কমে গেছে। বর্তমানে ২০-৩০ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে প্রতি পিস বাঙ্গি। তারপরও আমি খুশি, কারণ এক বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করতে আমার হাজার দশেক টাকা খরচ হয়েছে। এরই মধ্যে ৪০-৫০ হাজার টাকার বাঙ্গি বিক্রি করেছি। এখনো ফুল ধরছে। আশা করি, আরো বাঙ্গি বিক্রি করতে পারব।
ক্ষেত থেকে বাঙ্গি কিনতে আসা আব্দুল মজিদ নামে এক শিক্ষার্থী বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমি রোজার শুরু থেকেই নিয়মিত ইফতারের জন্য বাঙ্গি কিনতাম। কিন্তু বাজারের বাঙ্গি স্বাদবিহীন। পরে এখানকার খোঁজ পাওয়ার পর নিজে মাঠে এসে ক্ষেত থেকে বাছাই করে বাঙ্গি তুলি। সরাসরি ক্ষেত থেকে নেওয়া বাঙ্গি অনেক সুস্বাদু।
মিরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমেশ চন্দ্র ঘোষ বার্তা২৪.কমকে বলেন, অল্প সময়ে এবং স্বল্প খরচে লাভবান হওয়ায় অনেক কৃষক বাঙ্গি চাষ করেছেন। উপজেলায় তিন হেক্টর জমিতে বাঙ্গির আবাদ হয়েছে।
কৃষকরা একটু পরিশ্রমী হলে বহুমুখী ফসল উৎপাদন করে তারা আরো বেশি সফল হতে পারেন। ভিটামিন ‘এ’ সমৃদ্ধ বাঙ্গি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সহায়ক বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, বাঙ্গি চাষ অত্যন্ত লাভবান হওয়ায় আগামীতে আরো বেশি বাঙ্গির আবাদ করবেন কৃষকরা। এজন্য কৃষকদের যে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।