সম্প্রতি রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে পাঁচ রোগীর মৃত্যুতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটি।
সরেজমিনে উপস্থিত থেকে নানা তথ্য প্রমাণ সাক্ষ্যের ভিত্তিতে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। বার্তা২৪.কমকে তদন্ত কমিটির একাধিক সদস্য এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তদন্ত কমিটি সূত্রে জানা যায়, পুরনো এসির বিস্ফোরণেই আগুনের সূত্রপাত হয়। যার পিছনে রয়েছে হাসপাতালটির গাফিলতি। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি ছিল, শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে।
সোমবার (৯ জুন) বিকেলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে কমিটি।
এ প্রতিবেদনে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ইউনাইটেডের করোনা ইউনিটে ৫ জনের প্রাণহানির জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীনতা ও অবহেলা দায়ী।
পাশাপাশি হাসপাতালটির করোনা ইউনিট এবং এর আশেপাশে অগ্নিনির্বাপণের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও ছিল না বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাজ্জাদ হোসাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের তদন্ত কমিটির কার্যক্রম শেষ হয়েছে। বিকেলের দিকে প্রতিবেদন হাতে পাব। তখন বলা যাবে এর পিছনে কারা দায়ী।
এদিকে আইন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অগ্নিকাণ্ডে যদি হাসপাতালের মালিকপক্ষের অবহেলা প্রমাণ হয়। তাহলে ২ থেকে ৫ বছরের সাজা এবং অর্থদণ্ড হতে পারে দায়ীদের।
কেননা দণ্ডবিধির ৩০৪ (ক) ধারামতে, যদি কোনো ব্যক্তি অপরাধজনক নরহত্যা বলে গণ্য নয় এ রকম কোনো বেপরোয়া বা তাচ্ছিল্যপূর্ণ কাজ করে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটায়, সে ব্যক্তি ৫ বছর করাদণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন বা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মে বুধবার গুলশানের ইউনাইটেড হাসপাতালে করোনাভাইরাসের রোগীদের জন্য স্থাপিত আইসোলেশন ইউনিটে আগুন লাগে । এ আগুনে ঝরে যায় ৫ জনের প্রাণ।
নিহতরা হলেন- রিয়াজুল আলম (৪৫), খোদেজা বেগম (৭০), ভেরুন অ্যান্থনি পল (৭৪), মো. মনির হোসেন (৭৫) এবং মো. মাহাবুব (৫০)।
ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স সদর দফতর এই ঘটনার তদন্তের জন্য উপ-পরিচালক (ঢাকা) দেবাশিস বর্ধনের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে। পাশাপাশি একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছে ইউনাইটেড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।