ঘুড়ি ওড়ানো বাঙালি জাতির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু কালের আবর্তনে সেই ঘুড়ি ওড়ানোয় অনেকটাই ভাটা পড়ে গেছে। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ঘুড়ি ওড়ানো এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।
বিশ্বায়নের এই যুগে মাঠে-প্রান্তে হাতে লাটাই নিয়ে ঘুড়ি ওড়াবে এমন সময় ও সুযোগ এখন কোনটাই নেই। বাংলার আকাশ-বাতাসে এখন আর সচরাচর ঘুড়ি ওড়ানো দেখা যায় না।
এবছরের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। বাংলার নীল আকাশে উড়ছে বিভিন্ন প্রকার ও রঙের ঘুড়ি। পড়ন্ত বিকালে গ্রামাঞ্চলের মাঠে-প্রান্তে সব জায়গাতেই এখন শুধু ঘুড়ি আর ঘুড়ি। তবে এবার ঘুড়ির সাথে নতুন যোগ হয়েছে আলোকসজ্জার। বিভিন্ন রঙের ছোট ছোট লাইট দিয়ে সাজানো হচ্ছে ঘুড়ি। যা রাতের আকাশকে করছে আলোকময়।
রাজবাড়ীর বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা মেলে এমনই চিত্র। তরুণ-তরুণীরাসহ সব পেশা ও শ্রেণির মানুষ এবার ঘুড়ি উড়িয়ে সময় কাটাচ্ছে তারা। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, করোনার প্রভাবে এবার কেউ ঘর থেকে বের হতে পারছে না। তাই অবসর সময়টুকু তারা ঘুড়ি উড়িয়ে সময় কাটাচ্ছে। তাছাড়া আমরা বাঙালিরা আমাদের সংস্কৃতিকে কখনোই ভুলতে পারিনা। তাইতো আধুনিকতার যুগেও সময়-সুযোগ পেলেই আমরা ছুটে যেতে চায় আমাদের শিকড়ের কাছে।
স্বামী-স্ত্রীসহ ঘুড়ি উড়ানো দম্পতি মারুফ-ইশরাত জাহান বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের বেড়ে ওঠা গ্রামের মেঠো পথ সবুজ প্রকৃতি আর মাটির গন্ধ মেখে। শৈশবে বড়দের সাথে সারা বিকেল ঘুড়ি উড়িয়েছি। চিল ঘুড়ি, ডাউশ ঘুড়ি আরও কতো রকমের ঘুড়ি। এটাই ছিলো আমাদের বিনোদন। তখন মনে হতো ঘুড়ির সাথে আমাদের মন খানাও আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে । তাই তো ঘুড়ির সাথে এই সখ্যতা। সময় পেলেই মন ছুটে যায় সেই মেঠো পথ, সবুজ মাঠ আর শৈশবের দিনে ঘুড়ির কাছে।