আন্দোলনে হামলা, নোয়াখালী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক গ্রেফতার
জাতীয়
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলায় নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান খলিলকে (৫৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে আসামিকে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে। এর আগে, সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যার দিকে উপজেলার সোনাইমুড়ী বাজারের বড় মসজিদের সামনে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মোরশেদ আলম। তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার মামলার ৬ নম্বর আসামি খলিলুর রহমান। ওই মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া তার বিরুদ্ধে আরও কয়টি মামলা রয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মঙ্গলবার সকালে আসামিকে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হবে।
ঝালকাঠীর সুগন্ধা নদীতে অভিযান ১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার তিন বছর আজ। স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ লঞ্চ দুর্ঘটনায় এদিন প্রাণ হারিয়েছিল ৪৯ জন যাত্রী। ভয়াবহ সুগন্ধা ট্রাজেডির তিন বছর অতিবাহিত হলেও সেই রাতের স্মৃতি এখনো দগদগে ভুক্তভোগীদের কাছে। আবার অনেক পরিবারই একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে এখন দিন কাটাচ্ছে চরম অনিশ্চয়তায়। সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে অসহায় অস্বচ্ছল পরিবারগুলোকে পুনর্বাসনের আশ্বাস দিলেন জেলা প্রশাসক।
২০২১ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিকেলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসে বরগুনাগামী অভিযান ১০ লঞ্চ । লঞ্চটি ২৪ ডিসেম্বর ভোর রাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পৌঁছায় এসময় অনেকেই ছিল গভীর ঘুমে মগ্ন। হঠাৎ ইঞ্জিন রুম থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহুর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে গোটা লঞ্চে। আগুনের তীব্রতা এতটাই ছিল যে লঞ্চটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে চালক। অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে প্রাণ বাঁচায়। গভীর ঘুমে মগ্ন থাকা কেবিন রুমের যাত্রীসহ আগুনে পুড়ে নিহত হয় ৪৯ জন। ঘটনার পর ২৫টি মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হলেও অজ্ঞাত পরিচয়ের ২৪ জনকে দাফন করা হয় বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী গণকবরে। এরপর অজ্ঞাত পরিচয়ে দাফন করা ২৪টি মরদেহ শনাক্তের জন্য পর্যাক্রমে ৫১ জনের নমুনা সংগ্রহ করে সিআইডি‘র ফরেনসিক বিভাগ। এই ২৪ জনের মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় শনাক্ত হয়েছে সিআইডির ডিএনএ টেস্টে। এই দুর্ঘটনায় কেড়ে নিয়েছে কারো ভাই, কারো বোন, কারো মা-বাবা আবার কারো প্রিয় সন্তান। অগ্নিকাণ্ডের ৩ বছর পরও স্বজনদের কাছে প্রিয়জন হারানোর স্মৃতি দগদগ করছে।
অভিযান ১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের দিন সদ্য প্রসবজাত সন্তানকে দেখতে বরগুনার আসছিলেন বেতাগী উপজেলার কাজিরাবাদ ইউনিয়নের রিয়াজ হাওলাদার। সুগন্ধা নদীতে লঞ্চ দুর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান তিনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি স্বামী রিয়াজ হাওলাদারকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন স্ত্রী মুক্তা আক্তার। দুই সন্তান শ্বশুর শাশুড়ি নিয়ে এখন দুর্বিষসহ দিন কাটছে তার। স্বামীকে হারানোর পর থেকেই তাদের জীবনে নেমে এসেছে বিষাদের কালো মেঘ।
মুক্তা আক্তার বলেন, 'আমার ছোড পোয়াডা জন্মের পরপরই ওর বাপরে হারাইছে। আমরা হারাইছি আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন। পোয়াগো (ছেলেদের) খাওন পড়ন, শ্বশুর শাশুড়ির ভরপোষণ সবই সবই দেখতো ওর বাপে (রিয়াজ হাওলাদার)। এখন তো মোগো কেউ নাই কিছু নাই। ছেলেরা বড় হচ্ছে খরচ বাড়ছে। কতোজন কতো আশ্বাসই না দেলো কিন্তু কোন আশ্বাসেই কাজ হলো না। ডিসি অফিস দিয়া একটু সহযোগীতা করলেও আর কেউ ফিরে তাকায়নি আমাদের দিকে। যতই দিন যাচ্ছে ততই কষ্টের দিন আসছে।'
বরগুনা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক মো. হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, 'এতো বড় লঞ্চ অগ্নিকাণ্ড দক্ষিণাঞ্চলবাসী আর কখনো দেখেনি। এই অগ্নিকাণ্ডে কেউ হারিয়েছে মা-বাবা, কেউ হারিয়েছে ভাই-বোন, কেউ হারিয়েছে প্রিয় সন্তান। এমন অনেক পরিবার আছে যাদেও একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি নিহত হয়েছে এই অগ্নিকাণ্ডে। এসকল পরিবারগুলো নামমাত্র সহযোগীতা করা হলেও এদের পুনর্বাসনের জন্য স্থায়ী কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কাছে দাবি থাকবে যেসকল পরিবার অসহায় ও অস্বচ্ছল রয়েছে তাদের তালিকা করে সরকারিভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।'
বরগুনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, 'নিহত আহত প্রত্যেক পরিবারকেই সরকারিভাবে সহযোগীতা করা হয়েছে। তারপরও স্মরণকালের ভয়াবহ এই লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত অস্বচ্ছল, অসহায় পরিবারগুলোকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।'
রাজবাড়ীর সদর উপজেলার সূর্যনগর এলাকায় যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে দেলোয়ার হোসেন দুলাল ওরফে টাক দুলাল (৪৯) নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। এ সময় তার কাছ থেকে বিদেশী রিভলবার ও তাজা গুলি উদ্ধার করে তারা।
গ্রেপ্তারকৃত দেলোয়ার হোসেন দুলাল ওরফে টাক দুলাল সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নের সূর্যনগর এলাকার দয়ালনগর গ্রামের মৃত খলিল মন্ডলের ছেলে।
জানা গেছে, রাজবাড়ীর অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে গোপন তথ্যে খবর আসে সদর থানার সূর্যনগর এলাকায় দেলোয়ার হোসেন দুলাল ওরফে টাক দুলালের কাছে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এরই সূত্র ধরে রোববার রাত ১০ টার দিকে মেজর সাফিন আল সাইফ পলকের নেতৃত্বে ১৪ সেনা ওই এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় একটি বিদেশি রিভলভার (পাকিস্থানী) এবং ১ রাউন্ড তাজা বুলেটসহ দেলোয়ার হোসেন দুলালকে আটক করা হয়।
রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেন, গ্রেপ্তারকৃত দুলালকে সেনা ক্যাম্পের সদস্যরা আমাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। এসময় দেশকে চ্যালেঞ্জিং সময়ে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান আজকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছেন। একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন সুলিভান।’
বিবৃতিতে হোয়াইট হাউস আরও জানায়, ‘ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের মানবাধিকারের প্রতি সম্মান প্রদর্শন ও তা সুরক্ষার ক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন উভয় নেতা। একটি সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন জ্যাক সুলিভান। বাংলাদেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে, সেগুলো মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।’
গণমানুষ এবং তরুণদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল আসছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুরের পীরগাছার দেউতি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দুস্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
আখতার হোসেন বলেন, আমাদের রাজনৈতিক দলটি হবে সম্পূর্ণরূপে গণমানুষের এবং তরুণদের নেতৃত্বে একটি রাজনৈতিক দল। দীর্ঘ সময় ধরে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে এসেছি। বাংলাদেশের তরুণেরা জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে জীবন দিতে কার্পণ্য করেনি। এ তরুণদের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভরসার জায়গা তৈরি হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে একটি নতুন রাজনৈতিক শক্তির আবির্ভাব হতে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তরুণদের সেই শক্তিকে কোনোভাবেই কোনো সরকারের, অন্তর্বর্তী সরকারের বা অন্য কোনোভাবে তাদের সহযোগিতায় বা তাদের মদদপুষ্ট এমন কোনো দোষ আছে বলে আমি মনে করি না। কারণ বাংলাদেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের সঙ্গে এসে অংশগ্রহণ করছেন। দু-একজন মন্ত্রী বা উপদেষ্টা একটি দল গঠন করে দিতে পারবে সেটা আমাদের কাছে মনে হয় না এবং আমরা সেই অনুকম্পার প্রার্থীও নই।
ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত আছে, থাকবে উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্যসচিব বলেন, প্রয়োজনে আমরা মাঠে নামব। এখন যেটা প্রয়োজন সেটা হলো ভারতীয় অপপ্রচার ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরকারের শক্ত পদক্ষেপ এবং প্রতিবাদ করা। আন্তর্জাতিক পক্ষগুলোকে অবহিত করা এবং দেশ-বিদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভারতীয় মিডিয়ার অপপ্রচার ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জোরালো প্রচারণা চালানো। সেটা নিশ্চিত করার জন্য আমরা ছাত্র-জনতার কাছে আহ্বান জানাই।
এ সময় রংপুর নাগরিক কমিটির সংগঠক আলমগীর নয়ন, মো. আরিফুল ইসলাম, আই সুমন, খন্দকার মাইনুল ইসলাম মিমসহ জেলা মহানগর ও বিভাগীয় সংগঠকরা উপস্থিত ছিলেন।