বিপ্লব হত্যায় ৫ জন গ্রেফতার, ফেঁসে যাচ্ছেন এক জনপ্রতিনিধিও

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বগুড়া | 2023-08-31 08:20:10

বগুড়া শহরের বিপ্লব হত্যার প্রায় আড়াই বছর পর গ্রেফতার হয়েছে হত্যার সঙ্গে জড়িত ৫ যুবক। ছুরিকাঘাত করার প্রতিশোধ নিতেই পরিকল্পনা করে বিপ্লবকে (২৫) কৌশলে প্রাইভেটকার যোগে সোনাতলায় নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যার সঙ্গে জড়িত সকলেই বগুড়া শহরের আলোচিত একজন জনপ্রতিনিধির সহযোগী। পরিকল্পনাকারী হিসেবে সেই জনপ্রতিনিধিও ফেঁসে যাচ্ছেন বিপ্লব হত্যা মামলায়।

সোমবার (২২ জুন) সন্ধ্যায় বগুড়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আব্দুল মোমিনের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বিপ্লব হত্যার পুরো ঘটনা বর্ণনা করে জড়িতদের নাম প্রকাশ করেছেন।

এর আগে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা প্রেস বিফ্রিংয়ে বলেন ক্লুলেস এই হত্যা মামলাটি তিন দফা তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন করা হয়। গত প্রায় আড়াই বছর ধরে বিভিন্ন কৌশল ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতায় বিপ্লব হত্যার প্রধান আসামি রাজিব হোসেন রাজুকে (২৮) যশোর থেকে গ্রেফতার করা হয়। রাজু বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া পশ্চিমপাড়ার আব্দুর রউফের ছেলে।

গ্রেফতারকৃত অন্যরা হচ্ছেন- বগুড়া শহরের খান্দার এলাকার বেলাল হোসেন, হাসান আলী, আব্দুর রহমান শুটকু ও সোনাতলার সঞ্জয় কুমার মন্ডল।

জানাগেছে, ২০১৮ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে সোনাতলা থানার মহিষাপাড়া গ্রামের গনিজান কালভার্টের নীচে বস্তাবন্দী ক্ষতবিক্ষত মরদেহ পুলিশ উদ্ধার করে। ওইদিন বিপ্লবের বাবা হযরত আলী ছেলের মরদেহ শনাক্ত করেন এবং অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাতলা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জাহিদ হোসেন বলেন, এলাকায় আধিপত্য নিয়ে বিপ্লব ও রাজুর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল। খান্দার এলাকার ওই জনপ্রতিনিধি তার এক সহযোগীকে পাঠায় বিপ্লবকে তার অফিসে নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু বিপ্লব না গিয়ে তাকে ছুরিকাঘাত করে।এর জের ধরে রাজু ও তার সহযোগীরা বিপ্লবের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এরপর বিপ্লব রাজুকে হত্যা করার জন্য তার বাড়িতে গিয়ে ব্যর্থ হয়। পরে ওই জনপ্রতিনিধি তার ড্রাইভার রাজুকে নির্দেশ দেয় বিপ্লবকে যেখানেই পাবে হাত- পা ভেঙে দিতে । এরপরই রাজিব হোসেন রাজু ও তার সহযোগীরা পরিকল্পনা করে ১২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যার পর বিপ্লবের একজন ঘনিষ্ঠ একজনের সহযোগীতায় প্রাইভেটকার ভাড়া করে বিপ্লবকে সোনাতলায় একটি চাতালে নিয়ে যায়।সেখানে তাকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে হত্যার পর মরদেহ বস্তায় ভরে কালভার্টের নীচে ফেলে তারা বগুড়া শহরে চলে আসেন। এরপর রাজিব চলে যায় যশোরে তার মামার বাড়ি। সেখানে বসবাস করা কালে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে যশোরের এক মেয়ের সাথে। পরে তাকে বিয়ে করে যশোরেই স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক জাহিদ হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, প্রধান আসামি রাজিব হোসেন রাজু আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গ্রেফতারকৃত অপর চার আসামিকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর