আর মাত্র দুইদিন পরে ঈদ। কিন্তু সুনামগঞ্জের হাওরপাড়ে ঈদের আমেজ নেই। তিন দফা বন্যায় এখানের জনজীবন একেবারে থমকে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের পিঠ একেবারে দেয়ালে ঠেকে গেছে।
মূলত করোনা এবং তিন দফা বন্যার কারণে কারো কাজ নেই, হাতে টাকাও নেই। সরকারি এবং বেসরকারি কিছু সহায়তাই এখন ভরসা।
বুধবার (২৯ জুলাই) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলার বেশিরভাগ জনপদ এখনো পানিবন্দী। বন্যার কারণে এখানে ঈদের আমেজ অনেকটা ফিকে হয়ে গেছে। ঈদের আনন্দের বদলে ভোগান্তির ঘোলা জলে হাবুডুবু খাচ্ছে হাওরপাড়ের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর লাখো মানুষ। বানের পানিতে তলিয়ে যাওয়া কিছু মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে গেলেও বেশির ভাগই পানিবন্দী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। তারা এখন ত্রাণের আশায় পথ চেয়ে বসে থাকে।
জেলার জামালগঞ্জের পাগনার হাওরপাড়ের ফেনারবাঁক ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, এ এলাকার প্রত্যেকটা বাড়িতে বন্যার পানি ঢেউ খেলছে। কেউ কেউ সম্পদের মায়া ছেড়ে আশ্রয়কেন্দ্রে গিয়েছেন। আবার অনেকেই পানিবন্দী অবস্থায় নিজের ঘরের মধ্যে রয়েছেন।
ফেনারবাঁক ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের জয়ধর মিয়া বলেন, ‘মনের অবস্থা খুব খারাপ। এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে আছি। দুইদিন পরে ঈদ। কিন্তু বন্যার কারণে আমাদের এখন বেঁচে থাকাই দায়।’
জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের চানপুর গ্রামের হারুনুর রশিদ বলেন, ‘এবার আমাদের ঘরে ঈদ নাই। বন্যায় সব ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। এখন ঈদ করার মতো আমাদের পরিস্থিতি নাই।’
সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেন, ‘বন্যা কবলিত প্রত্যেক পরিবারকে ৬ দফায় ৫ কেজি করে চাল ও শুকনো খাবার দিয়েছি। এখন ১২ হাজার পরিবারকে ১০ কেজি করে চাল দেব।’
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, ২৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো (বুধবার পর্যন্ত) ২ হাজার ৯৪১টি পরিবার রয়েছে। পানি ধীরগতিতে নামায় এরা নিজ বাড়িতে ফিরতে পারছে না। আরও কয়েকদিন আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের থাকতে হবে। ঈদ উপলক্ষে বন্যার্তরা যেন ভিজিএফের চালসহ অন্যান্য সহায়তা পান সে বিষয়ে উপজেলা পরিষদ এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে বলে দেয়া হয়েছে।