‘নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান হচ্ছে না’

বিএনপি, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2023-08-14 21:48:58

নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সরকার রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধান করতে পারছে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মঙ্গবার (২৫ আগস্ট) বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ২৮তম প্রতিষ্ঠাবিার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাত ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীদের নিয়ে বিএনপি মহাসচিব পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, এই রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন, যারা মিয়ানমারকে সমর্থন দিচ্ছেন সেই চীন ও ভারত এই দুইটি দেশ। এই দুইটি দেশের সঙ্গে কোনো রকমের রফা করার সামর্থ্য এই সরকারের নেই। এখন পর্যন্ত এই সমস্যার বিষয়টাকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রী কোনো বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেননি, বিশ্ব সফর করেননি এবং জাতিসংঘে সেইভাবে গুরুত্বসহকারে বিষয়টাকে তুলে ধরতে পারেননি। যার কারণে এই রোহিঙ্গা সমস্যার বিশাল একটা বোঝা এদেশের মানুষকে বহন করতে হচ্ছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপরে নির্যাতন চলছে। এই সরকার নির্যাতন চালাচ্ছে। আপনারা জানেন যে, এখানে যারা উপস্থিত আছেন এরা সবাই দেশের খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠিত মুক্তিযোদ্ধা তারা যুদ্ধ করেছেন রণাঙ্গনে, তারা যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন সেক্টর কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেছেন। তাদেরকেও কারাগারে যেতে হয়েছে এবং নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে। শুধুমাত্র একটি কারণে তারা একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা এদেশে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছে। ঠিক একইভাবে গতকাল দুর্ভাগ্যজনকভাবে চট্টগ্রামের বাশখালীতে সরকারি দলের সংসদ সদস্যের গুন্ডারা মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতা-কর্মীদের ওপরে আক্রমণ চালিয়ে আহত করেছে। একমাত্র কারণে যে, ওই সংসদ সদস্যকে কোনো সমর্থন করা হয়নি। আমরা দুর্ভাগ্যের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনা সেটা ভুলণ্ঠিত হয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো সম্মান নেই। এখন বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটা নতজানু ব্যর্থ রাষ্ট্রের পরিণত করবার জন্যে সকল ষড়যন্ত্র চলছে।

১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্ট প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ১৫ আগস্ট ও ২১ আগস্টের ঘটনায় জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রীকে জড়ানো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র, যে চক্রান্ত, বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত তারই একটা অংশ। এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বারবার এদেশে সত্যিকার অর্থেই যারা মুক্তিযোদ্ধা, যারা দেশকে স্বাধীন করতে চেয়েছেন, যারা দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করেন, যারা নতজানু পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাস করেন না তাদের ওপরই এই আঘাত বারবার এসেছে। যেহেতু শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা দিয়েছিলেন, যেহেতু তিনি এদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যেহেতু এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে সবচেয়ে প্রাধান্য দিয়ে দেশকে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর জন্য কাজ শুরু করেছিলেন সেইজন্য তাকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই কারণে আজকে অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে, একটা প্রচারণা, প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে ।

তিনি বলেন, আমরা বার বার বলেছি এটা একটা ষড়যন্ত্র। সেই ষড়যন্ত্রটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ১৫ আগস্টের যে বিচার হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে বিচারে যে রায় হয়েছে এবং যারা আসামি আদালত মনে করেছে তাদেরকে তারা ফাঁসি কার্যকর করেছে। সেক্ষেত্রে আবার নতুন করে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নাম জাড়ানোর চেষ্টাই হচ্ছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিতের অপচেষ্টা এবং এদেশের স্বাধীনতাকামী মানুষদের চিন্তা-চেতনাকে অবমাননা বলে আমি মনে করি। ২১ আগস্টের ঘটনার সঙ্গে দেশনেত্রীকে জড়ানোর যে অপচেষ্টা সেটাও তারই একটা অংশ।

এই সময়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল জয়নুল আবেদীনসহ মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর