প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্য বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, জেনারেল জিয়া যদি যুদ্ধ না করতেন তাহলে তার পিতার শাসনামলে বীর উত্তম উপাধি পেলেন কীভাবে? জীবিত মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তখন তাকে বীর উত্তম উপাধি দেওয়া হয়েছিল।
মঙ্গলবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। ‘ইতিহাস বিকৃতি, ঘৃণার চাষ ও গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, মানুষের মনে প্রশ্নটা আসবে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক জেনারেল এমএজি ওসমানী উনি কি কখনো বন্দুক দিয়ে নিজে যুদ্ধ করেছেন? বিশ্ব যুদ্ধের সেনাপ্রধান কি নিজে গিয়ে যুদ্ধ করেছেন? আজকের দেশের প্রধানমন্ত্রী আমরা কি বলবো যে উনি বুঝেন না? একটা যুদ্ধ যেখানে সেক্টর কমান্ডার, ফোর্সেস কমান্ডার, ডিভিশনাল কমান্ডার'র তারা নিজে গিয়ে যুদ্ধ করেন এটা কখনো কোন দিন হয় নাই। কেন জেনেশুনে প্রধানমন্ত্রী একথা বলছেন।
জিয়াউর রহমানের লাশ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ৪০ বছর পরে প্রধানমন্ত্রীর মুখে শুনলাম জিয়াউর রহমানের লাশ নাকি সেখানে নাই। হত্যার পর জিয়াউর রহমানকে চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাশে একটি পাহাড়ে পুঁতে রাখা হয়েছিল। সেটি খুঁঁজে বের করে চট্টগ্রামের সিএমএইচে নিয়ে জিয়াউর রহমানের লাশ ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত করেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল তোফায়েল। এরপর তার মরদেহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঢাকায় নিয়ে আসেন। তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি এবং তিন বাহিনীর প্রধান সেই লাশ গ্রহণ করেন। তার লাশের পাশে আত্মীয়-স্বজন স্ত্রী-সন্তান কান্না করছেন এমন ছবি আছে। তার জানাজায় লাখো মানুষ দাঁড়ায় সবাইকে কি আপনি মিথ্যা বলতে আর আপনি তো সেখানে ছিলেন না অথচ বলছেন লাশ নেই।
তিনি বলেন, প্রকৃত ইতিহাসকে আমাদের জানতে হবে। কীভাবে এগুলো অস্বীকার করবেন। জিয়াউর রহমানকে নিয়ে এ পর্যন্ত যত কুরুচিপূর্ণ মিথ্যা কথা বলা হয়েছে প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বশীল ব্যক্তি হয়ে এ ধরনের বক্তব্য রাখতে পারেন না। রাজনীতিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য এ ধরনের বক্তব্য তিনি রাখছে। জাতিকে আপনি বিভ্রান্ত করতে পারেন না। এটা ঠিক নয়, জাতি এই বিষয়গুলো জানে।
কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, এ সরকারকে হটানো পর চেয়ার খালি থাকবে না। সেটাও ভাবতে হবে। এটা ভোটারবিহীন সরকার কিন্তু কেউ কি বলতে পারছে বাংলাদেশের সরকার নেই। জনগণের কাছে রাস্তাটা দিতে হবে যে এই সরকারের অপসারণ আমরা চাই এবং তার বিকল্প আমরা দিতে পারব।
ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেন, জিয়াউর রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দুঃখজনক ও অরুচিকর রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ জায়গায থেকে এ ধরনের নোংরামি বন্ধ করতে হবে।
বিএফইউজে সভাপতি এম আব্দুল্লাহ এর সভাপতিত্বে আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহামুদুর রহমান মান্না, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের আহ্বায়ক ওবায়দুল ইসলাম, সংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালিন নোমানী, বিএফইউজে সভাপতি রাশেদুল ইসলাম প্রমুখ।