২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচন চায় খেলাফত মজলিস

  • স্টাফ করেস্পন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

২০২৫ সালের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ। 

শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে  সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত দ্বাদশ অধিবেশন এই দাবি জানিয়েছেন তিনি। 

বিজ্ঞাপন

এসময় খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ বলেন, চূড়ান্ত বিজয় এখনো আসেনি। সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠিত করতে আমাদেরকে আরো অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে। সকল প্রকার দুর্নীতি, জুলুম ও অবিচার মূলোৎপাটনে আমূল সংস্কার প্রয়োজন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, যে সংস্কার কমিশনগুলো গঠন করা হয়েছে, তার কার্যকারিতা আরো দৃশ্যমান করুন। প্রশাসনিক সংস্কার সহ সকল সংস্কারে সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের মতামত প্রাধান্য দিন। বিশেষ করে শিক্ষা ও সংবিধান সংস্কার কমিশনে ইসলামী মূল্যবোধকে প্রাধান্য দিন। এখানে ইসলাম বিরোধী কোন অপতৎপরতা মেনে নেওয়া হবে না।

বিজ্ঞাপন

সমসাময়িক ঘটনা নিয়ে বলেন, আগুন সন্ত্রাসসহ সকল নাশকতা রুখে দিতে রাষ্ট্রীয় স্থাপনা সমূহের নিরাপত্তা জোরদার করুন। শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে অবিলম্বে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করান। বিডিআর হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বর গণহত্যাসহ সকল মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করুন। দ্রব্যমূল্য ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনতে উৎপাদন বৃদ্ধি ও বাজার মনিটরিং জোরদারের উদ্যোগ নিন। পাচারকৃত সকল অর্থ ফিরিয়ে আনুন। ডলারের তুলনায় টাকার অবমূল্যায়ন কমিয়ে আনুন। ২০২৫ এর ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করুন।

সকল দলের প্রতি ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, বৃহৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অব্যাহত আধিপত্যবাদি আচরণে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব আজও হুমকীর সম্মুখীন। হাজার হাজার শহীদের প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ আজ চতুর্মুখী ষড়যন্ত্রের শিকার। এই মুহূর্তে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য দল-মত নির্বিশেষে সকলের ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। আজকের এই অধিবেশন থেকে দেশপ্রেমিক সকল দলের প্রতি আমরা ঐক্যের আহ্বান জানাচ্ছি।

এছাড়া, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, হাজারো আলেমকে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার হামলা-মামলা দিয়ে নির্যাতন চালিয়েছে। তাদেরকে মানুষই মনে করেনি। বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন চৌকষ দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারকে হত্যা করেছে। শাপলা চত্বরে আলেমদেরকে হত্যা করেছে। সবাইকে এই ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, একটা দুঃসময় আমরা পার করেছি। আল্লাহ আমাদের সাহায্য করেছেন। বিগত ১৬ বছর আমাদের কেউ বাড়িতে ভালোভাবে ঘুমাতে পারেনি। হামলা-মামলার শিকার হয়ে পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। ভারত পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের সাথে তামাশা করছে। 

ইসলামী আন্দোলনের আমীর সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, আওয়ামীলীগ মূলত ভারতের সরকার ছিল। ভারতের স্বার্থ ছাড়া তারা দ্বারা দেশের কোন কল্যাণ হয়নি। জনগণের মতামত তোয়াক্কা না করে উপদেষ্টা নিয়োগ দেয়া অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত হয়নি। দেশ রক্ষা ও ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

খেলাফত মজলিশের এই অধিবেশন উদ্বোধন করেন সাবেক আমীর ও বর্তমান উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ ইসহাক।

এই অধিবেশনে আরও উপস্থিত ছিলেন, খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, খেলাফত মজলিস নায়েবে আমীর মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবি সমিতি সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, এবি পার্টির প্রধান উপদেষ্টা এ এফ এম সোলাইমান চৌধুরী, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, জাগপা সভাপতি রাশেদ প্রধান, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইজহার, গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।