জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি

বিএনপি, রাজনীতি

আকরাম হোসেন, স্টাফ করসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 21:17:50

প্রায় ১৫ বছর ক্ষমতার বাইরে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। সরকারের দমন-পীড়ন, হামলা-মামলায় নাজেহাল দলটির নেতাকর্মী। দলীয় দাবি-দাওয়া নিয়ে নিয়মিত কর্মসূচি দিলেও জনগণের দাবি দাওয়া নিয়ে তেমন একটা সবর দেখা যায়নি। জনসম্পৃক্ত ইস্যূতে শুধু সংবাদ বিবৃতি, মানববন্ধন, আলোচনা সভায় সীমাবদ্ধ থেকেছে। জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি নিয়ে জোড়ালোভাবে রাজপথে দেখা যায়নি। পুরোনো কৌশল পাল্টেছে, এবার জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে দলটি। কর্মসূচিতে দলীয় নেতাকর্মী ছাড়াও সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ত করতে চায়। কর্মসূচিতে এসেছে ভিন্নতা। জেলা-উপজেলায় সমাবেশের পাশাপাশি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে হাট-বাজারে হাটসভা, পথসভা ও লিফলেট বিতরণ করবে দলটি।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং উপজেলা পর্যায়ে ন্যায্যমূল্যে পর্যাপ্ত দ্রব্যসামগ্রির বিক্রির দাবিতে সারাদেশে টানা ১১ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। আগামীকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে এসব কর্মসূচি। শেষ হবে আগামী ১৫ মার্চ। শুরুর প্রথম দিনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ। ২৮ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় সদর/মহানগরে বিক্ষোভ সমাবেশ। ২ মার্চ সারা দেশে জেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ। ৫ মার্চ সারা দেশে উপজেলা পর্যায়ে বিক্ষোভ সমাবেশ। ৬ মার্চ জাতীয়তাবাদী ছাত্র দলের উদ্যোগে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে।

এছাড়া ৮ মার্চ জাতীয়তাবাদী যুব দলের উদ্যোগে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ। ৯ মার্চ জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ। ১০ মার্চ জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের উদ্যোগে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ। ১২ মার্চ বিএনপি'র উদ্যোগে সারা দেশে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে হাট-বাজারে হাটসভা, পথসভা ও লিফলেট বিতরণ। ১৪ মার্চ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং ১৫ মার্চ জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উদ্যোগে সারা বিক্ষোভ সমাবেশ। গতকাল (২৪ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

হাট-বাজারে পথসভা প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান সময়ের জন্য এই কর্মসূচি নতুন ধরনের। আগে আমরা করেছি। পাকিন্তান আমলে, আমরা যখন ছাত্র ছিলাম তখন হাট-বাজারের হাটসভা করতাম। হাটের দিন চোঙ্গা দিয়ে হাটসভা করা হত। এখন হ্যান্ডমাইক দিয়ে করা যাবে।

কর্মসূচি সফল করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে বিএনপি। প্রথম জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি নিয়ে জনগণের দোরগোড়ায় যেতে চায়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কর্মসূচি দিলে ধাপে ধাপে কর্মসূচি বাড়িয়ে সরকার পতনের চূড়ান্ত আন্দোলনে করতে চায় দলটি।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এমরান সালেহ প্রিন্স বার্তা২৪.কম-কে বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কষাঘাতে সাধারণ মানুষ জর্জরিত। এই পরিস্থিতে জনগণের দল হিসেবে বিএনপির অবশ্যই কিছু করার আছে। প্রথমে সরকারকে বলেছি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য। সরকার এই ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়নি, বরং উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে জনগণের দুর্ভোগকে উপহাস করেছে। আমাদের এই কর্মসূচিতে জনগণকে ব্যাপকভাবে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছি। বিএনপি জনগণের দল, জনগণের ইস্যূ নিয়ে বিএনপি কথা বলে। এর আগেও জনগণের ইস্যূ নিয়ে আন্দোলন করেছি, কথা বলেছি কর্মসূচি দিয়েছি। সেইসব কর্মসূচি পালনে সরকার বাধা দিয়েছে। হামলে পড়েছে, মিথ্যা মামলা দিয়েছে, গ্রেফতার করেছে। এইসব বাধাবিঘ্ন উপেক্ষা করে আমাদের কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে গেছি। এবারেও যত বাধাবিঘ্ন আসুক আমরা  কর্মসূচি এগিয়ে নিয়ে যাব। আমাদের সংগঠনিক, রাজনৈতিক প্রস্তুতি ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এই কর্মসূচি অবশ্যই চূড়ান্ত আন্দোলনের ওয়ার্কআপ। আন্দোলন তো ধাপে ধাপে আগায়। এই আন্দোলনই সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত হবে।

বিএনপির আন্দোলন সফল করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। ২৪ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি বলেন, আমরা খুব শিগগিরই রাজপথে আন্দোলনে নামব। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিরোধ এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের এই লড়াইয়ে সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সকল দেশপ্রেমিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্ব স্ব অবস্থান থেকে এগিয়ে আসুন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে এসব কর্মসূচি নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে দেশবাসীকে সম্পৃক্ত করতে যাচ্ছি। দেশবাসীকে আহবান জানাচ্ছি তাদের প্রয়োজনে এসব কর্মসূচি যোগ দিন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর