বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেছেন, সরকার এখন মৃত ব্যক্তিদেরকেও মামলার আসামি করছে।আইনজীবীদের জনপ্রিয় নেতা এডভোকেট মো. সানাউল্লা মিয়া সাড়ে তিন বছর আগে মৃত্যুবরণ করলেও গত ২৮ অক্টোবরের ঘটনায় দায়েরকৃত একটি মামলায় তাকে আসামি করা হয়েছে। আমরা এই ধরনের বেআইনি হীন কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
সোমবার (১৩ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হলের দ্বিতীয় তলায় জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কর্তৃক আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারকৃত বিরোধী নেতাকর্মীদের মিডিয়া ট্রায়াল এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্রেফতারকৃত নেতা-কর্মীদের ঢাকার একটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় গ্রেফতার দেখানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের পুনরুদ্ধার, আইনের শাসন কায়েম এবং সর্বোপরি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে গণতন্ত্রপন্থী মুক্তিকামী জনতা দেশের প্রধান বিরোধী দল- বিএনপির নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি'র ডাকে ঢাকার নয়াপল্টনে এক শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রযন্ত্রের পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক সেই শান্তিপূর্ণ সমাবেশে কিভাবে পণ্ড করে দেওয়া হয়েছিল তা সমগ্র বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন, ২৮ অক্টোবরের শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে এর আগে ও পরে ৬১৩টি মামলা দায়েরের মাধ্যমে বিরোধী দলীয় ১৩ হাজার ৩৮৬ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। দেশ-বিদেশের প্রায় সকল মিডিয়াতে যা Commonly বলা হচ্ছে Crack Down on BNP। আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক গ্রেফতারকৃত অনেক নেতা-কর্মীকে রিমান্ডে এনে তথাকথিত স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করে বিভিন্ন মিডিয়াতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে। যা মিডিয়া ট্রায়ালেরই নামান্তর। এ কাজের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সরকারি দলের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে।
অথচ মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের দ্বৈত বেঞ্চ গত ২০১২, ২০১৫ এবং ২০১৯ সালের বিভিন্ন মামলায় রিমান্ড, গ্রেফতার ও পরবর্তী মিডিয়া ট্রায়াল না করার জন্য সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে এবং যা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক অবশ্য পালনীয় বলে আমরা মনে করি। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কর্তৃক এই সমস্ত মিডিয়া ট্রায়াল দেশের প্রচলিত আইন এবং সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘনও বটে।