সরকার পতনের এক দফা ও ঘোষিত তফসিল বাতিলের দাবিতে বিএনপির ডাকা অবরোধকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রকি হোসেন পিচ্চির ছোট ভাই রিয়াজ হোসেন রাব্বিকে খুলশী থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। পরে থানায় নিয়ে তাকে সারারাত শারীরিক নির্যাতন করা হয়েছে দাবি দলটির। এ ঘটনায় চট্টগ্রামের বিএনপি নেতারা তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) পুলিশের এ ধরনের গ্রেফতার ও নির্যাতনে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান, মীর মো. নাছির উদ্দীন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর।
এদিন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা বলেন, বিএনপির চলমান অবরোধকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে ভুয়া ও গায়েবি অভিযোগ তুলে পুলিশের সদস্যরা এখন বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিরাতে তল্লাশির নামে হয়রানি ও নির্বিচারে গ্রেফতার করছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে তাদের আটক করতে না পেরে পরিবারের অন্য সদস্যদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
এর ধারাবাহিকতায় সোমবার রাতে মহানগর ছাত্রদলের সদস্য রকি হোসেন পিচ্চিকে খুলশী থানা পুলিশ তার ওয়ার্লেস ২ নাম্বার লেইনের বাসায় ধরতে গিয়ে তাকে না পেয়ে তার ছোট ভাই রিয়াজ হোসেন রাব্বিকে ধরে নিয়ে যায়। পুলিশী অভিযানের সময় রাব্বি তার দোকানে অবস্থান করছিল। তার নামে কোনো মামলা ছিল না। থানায় নিয়ে পুলিশ তাকে সারারাত শারীরিক নির্যাতন করে তার হাত দুই ভেঙ্গে দিয়েছে। সে বর্তমানে মুমূর্ষু অবস্থায় আছে। রাব্বিকে গ্রেফতার করার সময় তার বাসার আশেপাশের নারী পুরুষ তাকে রক্ষা করতে আসলে পুলিশ মহিলাদের সাথে দুর্ব্যবহার করে।
বিবৃতিতে নেতারা আরও বলেন, কয়েক দিন আগে খুলশী থানা পুলিশ তার বড় ভাই ওয়াকিল হোসেন বগাকে গ্রেফতার করেছিল। এর আগে রবিবার সন্ধ্যায় আগ্রাবাদ জাম্বুরী মাঠের পাশ থেকে ডবলমুরিং থানা পুলিশ বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মোস্তফাকে আটকের সময় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও পুলিশ নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করে। বর্তমানে মোস্তফার শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। মোস্তফাকে নির্যাতন করার সময় তার ছেলে তাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও মেরে মাথা পাটিয়ে দেওয়া হয়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে পুলিশ বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আবারও ষড়যন্ত্রমূলক অপ তৎপরতা শুরু করেছে। আওয়ামী লীগের নীল নকশা বাস্তবায়নে মাঠে নেমেছে সিএমপির কতিপয় পুলিশ কর্মকর্তা। বিএনপির প্রতি পুলিশের রুদ্রমূর্তি দেখে মনে হয় আওয়ামী লীগের সাথে পুলিশের একটা চুক্তি হয়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে তারা যেভাবে গায়েবি মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছিল। ঠিক তেমনিভাবে কিছু অতি উৎসাহী পুলিশ কর্মকর্তা আবারও গ্রেপ্তার নির্যাতন শুরু করেছে। প্রশাসন এখন আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে বিজয়ী করার যন্ত্রে পরিণত হয়েছে। আমরা পুলিশ বাহিনীর এ ধরনের আচরণের নিন্দা জানাচ্ছি।
নেতৃবৃন্দ পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপিকে মাঠছাড়া করতে সরকারের অগণতান্ত্রিক নির্দেশে আপনারা যা করছেন, তা জাতি দেখছে। বাড়াবাড়ির পরিণাম অবশ্যই শুভ হতে পারে না। আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী, আওয়ামী লীগের কর্মচারী নন। আপনারা আওয়ামী লীগের কর্মীর ভূমিকার অবতীর্ণ হবেন না। গায়েবি মামলা, হামলা, নির্যাতন ও গণগ্রেফতার বন্ধ করুন। অন্যথায় জনতার আদালতে আপনাদের জবাবদিহি করতে হবে।