‘অবিলম্বে গ্রেফতার শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিতে হবে এবং সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। নির্বিচারে গ্রেফতার, রাজনৈতিক নেতাদের আটক করা ও রিমান্ডে নেয়া বন্ধ করতে হবে। নিহতদের পরিবারকে যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ও ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আহতদের চিকিৎসা এবং পঙ্গুদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে, ক্যাম্পাসে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিকারী ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
শনিবার (৩ আগস্ট) দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক লিখিত বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মাওলানা মামুনুল বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা কোটা সংস্কারের যৌক্তিক দাবি নিয়ে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল। তাদের দাবিতে কর্ণপাত না করে উল্টো সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে উস্কানি ও কটাক্ষমূলক বক্তব্য দেওয়া হয়।’
তিনি বলেন, ‘মানুষকে হত্যা ও নির্যাতন করে ক্ষমতায় থাকা যায় না। এ জন্য সরকারের পদত্যাগই হচ্ছে একমাত্র সমাধান।’
মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হক বলেন, ‘সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা আন্দোলনকে দমন করতে ছাত্রলীগ, যুবলীগকে সাধারণ ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে উস্কে দেয়। ছাত্রলীগ ও পুলিশ বাহিনী শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে অশান্ত করায় রাজপথ আজ উত্তাল হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে ছাত্রলীগ ও পুলিশের গুলিতে শত শত শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনতা নিহত হয়েছে। তাদের এই নির্বিচার গুলিবর্ষণ ও নারকীয় তাণ্ডবে বহু শিশু প্রাণ হারিয়েছে। হাজার হাজার ছাত্র-জনতা আহত হয়েছে। অনেকে চিরদিনের জন্য চোখ হারিয়েছে, কেউ পা হারিয়েছে, কেউ হাত হারিয়েছে। আহতদের যথাযথ চিকিৎসার ক্ষেত্রেও নানাবিধ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। গোটা দেশ আজ মৃত্যুপুরি। সরকার যেন কোমলপ্রাণ কিশোর-যুবা-শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে। ফলে দেশ এখন এক মহাসঙ্কটে আবর্তিত।’
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, ‘ছাত্রসমাজের চলমান শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক আন্দোলন ও নয় দফা দাবির প্রতি আমরা সংহতি প্রকাশ করি। ছাত্রসমাজের ওপর যাতে আর একটি গুলিও চালানো না হয় সেই দাবিও করি। একইসঙ্গে আমরা এটাও স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা কোনো প্রকার সহিংসতা সমর্থন করি না। আমরা শতভাগ নিরপেক্ষ ও আন্তর্জাতিকভাবে তদন্ত করে প্রকৃত দোষীদেরকে চিহ্নিত করে তাদেরকে শাস্তির আওতায় আনার দাবি করি। পাশাপাশি তদন্তের আগে সরকারের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক হীনস্বার্থে ঢালাওভাবে বিরোধী মতের লোকদের দায়ী করে বক্তব্য দেয়া সুষ্ঠু তদন্তে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে বলে মনে করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘চলমান আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি, যারা আহত হয়েছেন তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি দেশবাসীর প্রতি হতাহতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাচ্ছি এবং ক্ষতিগ্রস্থদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
আমিরে মজলিস শায়খুল হাদিস আল্লামা ইসমাঈল নুরপুরীর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, নায়েবে আমির মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, মাওলানা খুরশিদ আলম কাসেমী, মুফতি সাঈদ নুর, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মাওলানা কোরবান আলী কাসেমী, মাওলানা আব্দুল আজীজ, মুফতি শরাফত হোসাইন, মাওলানা মহবুবুল হক, মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজী, অফিস ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, সাংগঠনিক সম্পদক মাওলানা এনামুল হক মুসা, মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সাল, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা সামিউর রহমান মুসা, কেন্দ্রীয় বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা নিয়ামতুল্লাহ, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা মুহসিনুল হাসান, কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া, সহ-সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা শরীফ হোসাইন, সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, নির্বাহী সদস্য মাওলানা সাব্বির আহমদ উসমানী, মাওলানা জসিম উদ্দীন, মাওলানা রুহুল আমীন খান, মাওলানা মুহসিন উদ্দীন বেলালী, মাওলানা হেদায়াতুল্লাহ হাদী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মুফতি নুর মোহাম্মদ আজিজী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা ছানাউল্লাহ আমিনী, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আনোয়ার হোসাইন রাজী, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ আশিকুর রহমান জাকারিয়া প্রমুখ।