আগামীর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই: নুর

, রাজনীতি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-10-03 18:55:14

বিবাদ এবং বিদ্বেষ এর বিপরীতে গণধিকার পরিষদ জাতীয় ঐক্য ও সংহতি প্রকাশের মধ্য দিয়ে আগামীর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চান বলে জানিয়েছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে অবস্থিত গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়ে 'ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্খাকে ধারণ করে রাষ্ট্র সংস্কার ও আগামীর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের সংগ্রামকে বেগবান করতে গণঅধিকার পরিষদে যোগদান কর্মসূচি' শীর্ষক এক সংবাদ সন্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

নুরুল হক নুর বলেন, গণঅধিকার পরিষদ গণ মানুষের একটা দল হবে। গণঅধিকার পরিষদের যে সহযোগী সংগঠন আপনারা তাদের কাজকর্ম সম্পর্কে জানেন। কালো টাকা ও পেশি শক্তি নির্ভর দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতির বিপরীতে গণঅধিকার পরিষদ একটি উদার প্রগতিশীল অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। বিবাদ এবং বিদ্বেষের বিপরীতে গণঅধিকার জাতীয় ঐক্য ও সংহতি প্রকাশের মধ্য দিয়ে আগামী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে চাই।

তিনি বলেন, গণঅধিকার পরিষদ মনে করে আগামীর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে নতুন রাজনীতি বন্দোবস্ত এবং নতুন নেতৃত্বের বিকল্প নেই। বিদ্যমান নেতৃত্ব এবং বিদ্যমান রাজনীতি গত পাঁচ দশক ধরে কি করেছে সেটা জাতির সামনে পরিষ্কার।

নুর বলেন, তাই জনগণকে আমরা বলতে চাই ক্ষমতা দখল কিংবা ক্ষমতায় বসা নয়, জনগণের ক্ষমতায়ন এবং জবাবদিহিতামূলক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই গণধিকার পরিষদের অঙ্গীকার। যে কারণে আমাদের স্লোগান ছিল জনতার অধিকার আমাদের অঙ্গীকার, আমাদের অঙ্গীকার দেশ হবে জনতার। সেই জায়গা থেকে জনগণকে আমরা এই নতুন রাজনৈতিক দল ও প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিতে গণঅধিকার পরিষদে আহ্বান জানাই।

বর্তমান সরকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন ইতিহাস তৈরি হয়নি। দল মত নির্বিশেষে ভিন্নমত পথের মানুষ এইভাবে একটা সরকারকে সমর্থন করছে। কাজেই এই সরকারের প্রতি যে জনগণের প্রত্যাশা সেটা পাহাড় চলবে প্রত্যাশা। সরকারকে সেটি ধারণ করে কাজ করতে হবে। সরকারের জনভিত্তি না থাকলে সরকার ক্ষমতায় টিকতে পারবে না। রাষ্ট্র সংস্কার করতে পারবে না। জনগণের আকাঙ্ক্ষাই আগামী বাংলাদেশের যে সংস্কারের পথ সেই পথে যেতে পারবে না। তাই সরকারকে বারবার আমরা স্বরন করিয়ে দিতে চাই আপনাদের শক্তি সামর্থ্য জন ভিত্তি হবে রাজনৈতিক দলগুলো। এই নতুন রাজনীতিতে বিশ্বাসী গণঅধিকার পরিষদের মত রাজনৈতিক দলগুলো আপনাদের পূর্ণ সমর্থন এবং সহযোগিতা করতে চাই। পাশাপাশি আমি মনে করি বিদ্যমান সকল রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সরকারের সাথে একটি আলাপ-আলোচনা ও বোঝাপড়ার বিষয় থাকতে হবে। রাজনৈতিক দল গুলোর সাথে দূরত্ব তৈরি হলে সেটা এই সময় আরও রাজনৈতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করবে। সরকার সেই বিষয়ে খেয়াল রাখবে।

নুর বলেন, আমাদের পরিষ্কার একটি কথা, আমরাই ৫০ বছরের যে সুযোগ পেয়েছি রাষ্ট্র সংস্কার এই মাফিয়া লুটেদের বিচার কোন সরকার করে নাই। এই সরকারকে মাফিয়া লুটেরাদের বিচার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। গণহত্যাকারীদের বিচার করে ইতিহাসে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে। এই গণহত্যার সাথে জড়িত আওয়ামী লীগ এবং তার দোসরদেরকে রাজনৈতিকভাবে ন্যূনতম ১০ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করতে হবে। তবেই আমরা আগামীর কাঙ্খিত বাংলাদেশ বিনির্মাণের সাথে এগিয়ে যেতে পারবো। এই দুর্বৃত্ত গণহত্যাকারীরা যদি রাজনীতির সুযোগ পায় আবার বাংলাদেশ সেই অন্ধকারে পতিত হবে। তাই সরকারের প্রতি পরিস্কার ভাবে আমাদের দাবি এবং আহ্বান আপনাদের প্রতি জনগণের যে সমর্থন রয়েছে জনগণ আপনাদের মাধ্যমেই রাষ্ট্র সংস্কারের পথটা শুরু করতে চাই। এই গণহত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে চাই। তাই আপনারা জনগণের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করুন। জনগণের মনের ভাষাটা বোঝার চেষ্টা করুন।

সাধারণ সম্পাদক মো.রাশেদ খাঁন বলেন, আজকে থেকে গণ অধিকার পরিষদে যোগদান কর্মসূচি শুরু হলো।

তিনি বলেন, ঐতিহাসিক কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়েছিল ২০১৮ সালে। তখন সে আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলাম আমরা। আজ যে আন্দোলনের আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতন হয়েছে সেই আন্দোলনের বীজ বপন করেছিলাম আমরা। তখন আমাদের সভাপতির একটি বক্তব্যে অনেকে উদ্বুদ্ধ হয়েছিল। যে ইতিহাস আমরা শুরু করেছিলাম ২০১৮ সালে সেই ইতিহাস শেষ করেছি ২০২৪ সালে।

তিনি বলেন, গণঅধিকার পরিষদ আগামীতে এই দেশের নেতৃত্ব দিতে চায়। আমরা আগামীতে ৩০০ আসনে প্রার্থী দিতে চায়। বাংলাদেশের মানুষ চায় পরবর্তন। আর গণঅধিকার পরিষদ সেই পরিবর্তনের রাজনীতি করে।

যোগদান অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন স্থানের বিভিন্ন দলের থেকে যোগ দেয়া মোট ২০ জনকে ফুলদিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর