সিডনি টেস্ট। অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান সিরিজের শেষ ও বিদায়ী টেস্ট। একইসঙ্গে তারকা ডেভিড ওয়ার্নারের বিদায়ী টেস্ট। অজিদের জন্য বাড়তি স্পেশালই বটে। শেষ পর্যন্ত সিডনিতে অজিদের জয়জয়কার। সিরিজে অজিদের ৩ এর বিপরীতে পাকিস্তানের অর্জন ০। ব্যাটে-বলে কোনো ক্ষেত্রেই যেন পাত্তায় পেল না পাকিস্তান। তাদের দেওয়া ১৩০ রানের মামুলি লক্ষ্য অনায়সেই টপকে গেল স্বাগতিকরা। ৮ উইকেটের বড় জয়ে পাকিস্তানকে ৩-০ তে সিরিজ হারাল প্যাট কামিন্সের দল।
সিরিজে পাকিস্তানের বোলিংটা ছিল মন্দের ভালো। তবে ব্যাটিং-ফিল্ডিংয়ের অবস্থা যেন যাচ্ছেতাই। তিন ম্যাচের ছয় ইনিংস মিলিয়ে একটি সেঞ্চুরিরও দেখা পায় নি পাকিস্তানি ব্যাটাররা। ফিফটিও মোটে ৭টা। মূলত এই দুই জায়গাতেই হেরেছে শান মাসুদের দল।
পার্থ, মেলবোর্ন, এবং শেষে সিডনি টেস্ট। যার কোনোটিই গড়াল না পঞ্চম দিনে। প্রতিটি টেস্টে ফলাফল মিলেছে চতুর্থ দিনেই। সিরিজে ব্যাটিং ব্যর্থতা জারি রেখে সিডনি টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৭ উইকেটে ৬৭ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করে পাকিস্তান। চতুর্থ দিনে বাড়তি ১১০ বল খেলে ৪৩ ওভার ১ বলে সবকটি উইকেট হারিয়ে পাকিস্তানের সংগ্রহ থামে ১১৫ রানে। দলীয় সর্বোচ্চ ৩৩ রান করেন সাইম আইয়ুব। অজিদের হয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ চার উইকেট নেন জশ হ্যাজলউড, নাথান লায়ন নেন তিনটি।
লক্ষ্যটা নিতান্তই মামুলি। তবে সেখানে শুরুতেই ধাক্কা খায় অজিরা। দ্বিতীয় ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলেই লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন উসমান খাজা। এতে রানের খাতা না খুলেই সাজঘরে পাড়ি জমালেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। তবে নিজের বিদায়ী টেস্টের বিদায়ী ইনিংসে, তা বেশ ভালোভাবেই রাঙিয়ে রাখলেন ওয়ার্নার। মারনাস লাবুশেনকে নিয়ে পুরোদস্তুর ওয়ানডে মেজাজে সহজ জয়ের পথে এগোন তিনি। লাল বলের ক্রিকেটে নিজের শেষ ইনিংসে তুলে নেন ফিফটি। তবে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়া হলো না তার। দলীয় ১১৯ রানের মাথায় সাজিদ খানের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে ফেরেন ওয়ার্নার। এর আগে ব্যক্তিগত খাতায় যোগ করেন ৭৫ বলে ৫৭ রান। বাকি কাজ অনায়সেই সারেন ৬২ রানে অপরাজিত থাকা লাবুশেন। ২৫ ওভার ৫ বলে ৮ উইকেট হাতে রেখেই দল পৌঁছে যায় জয়ের বন্দরে।
এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৯৬ রানের ৫ উইকেট হারানোর পর রিজওয়ানের ৮৮ এবং জামালের ৮২ রানের ইনিংসে ভর করে ৩১৩ রানের সংগ্রহ পায় পাকিস্তান। বল হাত ফাইফারে হ্যাটট্রিক করেন কামিন্স। মেলবোর্ন টেস্টে দুই ইনিংসে ফাইফারের পর সিডনি টেস্টের প্রথম ইনিংসেও তুলে নেন ৫ উইকেট। জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো পেলেও জামেলের পেস তোপে ২৯৯ রানেই গুটিয়ে যায় অজিরা। সেখান দলীয় সর্বোচ্চ ৬০ রান করেন মারনাস লাবুশেন এবং মিচেল মার্শ করেন ৫৩ রান।
এতে ১৪ রানের লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে শান মাসুদের দল। আগের ইনিংসে প্যাট কামিন্সের পর এবার পেস তাণ্ডবে মাতেন জশ হ্যাজলউড। তৃতীয় দিন শেষে পাকিস্তানের সাত উইকেটের মধ্যে একাই নিয়েছেন ৪টি। এর মধ্যে দিনের শেষ ওভারেই নেন তিনটি। চতুর্থ দিনে বাকি কাজ সারেন স্পিনার লায়ন। এতে স্রেফ ১১৫ রানেই গুটিয়ে যায় পাকিস্তান।
দলকে সাফল্য এনে নিতে না পারলেও ব্যাট হাতে ৮২ রানের পর বল হাতে ৬ উইকেট তুলে নেওয়া আমের জামাল পান ম্যাচসেরার পুরস্কার। সিরিজের তিন ম্যাচে ১৯ উইকেট ও ৩৮ রানের ভোর সিরিজসেরার খেতাবটি নিজের করে নেন অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্স।