টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাংলাদেশ আসরে ঠিক ১০ বছর আগে ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠেছিল ভারত। সেই ম্যাচটি অবশ্য শ্রীলঙ্কার কাছে ৬ উইকেটে হেরেছিল তৎকালের মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বাধীন দলটি। এরপর আরও দুই আসরের সেমিতে পৌঁছালেও ফাইনাল খেলা হয়নি ভারতের। অবশেষে তৃতীয়বারের প্রচেষ্টায় এক দশক পর সাদা বলের এই ফরম্যাটের বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছাল রোহিত শর্মার দল। এর আগের ২০২২ আসরে ইংল্যান্ডের কাছে ১০ উইকেটে হেরে সেমি থেকে বিদায় নিয়েছিল ভারত। এতে বছর দুয়েক পর টুর্নামেন্টের এই নবম আসরে ‘প্রতিশোধ’ নিয়ে ইংলিশদের ৬৮ রানে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটল রোহিত-কোহলিরা।
অ্যাডিলেইডের সেই ম্যাচে ভারতের দেওয়া ১৬৯ রানের লক্ষ্য কোনো উইকেট না হারিয়েই তুলে ফেলেছিল ইংলিশরা। এবারের সেমিতেও লক্ষ্যটা ছিল অনেকটা কাছাকাছিই, ১৭২ রানের। তবে এবার ভারতীয় স্পিনারদের সামনে টিকতেই পারল না বাটলার-সল্টরা। ১৬ ওভার ৪ বলে ১০৩ রানেই গুটিয়ে যায় তারা। আর এতেই আগের আসরের চ্যাম্পিয়নদের বিদায় করে টুর্নামেন্টে তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে পৌঁছাল ভারত।
গায়ানা প্রভিডেন্স স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় সেমি-ফাইনাল ম্যাচটি শুরু হয়েছে বৃষ্টি বাঁধা দিয়ে। এতে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট বিলম্বে শুরু হয় ম্যাচ। টস জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন ইংলিশ অধিনায়ক জশ বাটলার। সেখানে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৭১ রান তোলে ভারত।
চ্যালেঞ্জিং সেই লক্ষ্য তাড়ায় বাটলারের ব্যাটিং তাণ্ডবে শুরুটা বেশ ঝোড়ো পেয়েছিল ইংলিশরা। ৩ ওভারের তাদের স্কোরবোর্ডে উঠেছিল ২৬ রান, যার মধ্যে ২৩ রান বাটলারের। পরের চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই ইনিংসের প্রথম ধাক্কা খায় তারা। অক্ষর প্যাটেলের বল রিভার্স সুইপ মারতে গিয়ে বাটলারের ব্যাটের কানায় লেগে উঠে যায় পান্তের কাছে। সেখানে সহজ এক ক্যাচ নেন ভারতীয় উইকেটরক্ষক।
উইকেট হারানোর সেই শুরু, এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে ইংলিশ ব্যাটাররা। ৪৯ রানেই সাজঘরে পাড়ি জমায় অর্ধেক দল। পরে হ্যারি ব্রুকের ২৫ এবং জোফরা আর্চারের ২১ রান কেবলই কমিয়েছে হারের ব্যবধান এবং ইংলিশরা গুটিয়ে যায় ১০৩ রানেই। সেখানে ৪ ওভার বল করে ২৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন অক্ষর এবং জেতেন ম্যাচসেরার খেতাবও। এদিকে কুলদীপ যাদবও নেন ৩ উইকেট এবং বুমরাহ নেন ২টি।
এদিকে এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা আশাজাগানিয়া হলেও দিনও টিকতে পারলেন না বিরাট কোহলি। দলীয় ১৯ রানের মাথায় ফিরেছেন ৯ রান করে। এদিকে দ্রুতই ফেরেন রিশাভ পান্তও। স্কোরবোর্ডে তখন ৫ ওভার ২ বলে ৪০ রান। তবে আগের ম্যাচের ছন্দে এ ম্যাচেও ধরে রেখে এগোতে থাকেন রোহিত শর্মা। চারে নেমে দলের অধিনায়ককে যোগ্য সঙ্গ দিতে থাকেন সূর্যকুমার যাদবও। তবে ইনিংসের অষ্টম ওভার শেষে ফের নামে বৃষ্টি এবং আবারো খেলা বন্ধ থাকে প্রায় ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট।
দ্বিতীয় দফার বৃষ্টি শেষে খেলা শুরুর পর উইকেট সামলে রানের গতি সচল রেখে এগোতে থাকেন রোহিত-সূর্যকুমার। তাদের তৃতীয় জুটি থেকে আসে ৭৩ রান। সেখানে দলীয় সর্বোচ্চ ৩৯ বলে ৫৭ রান করে ফেরেন অধিনায়ক রোহিত। সেখানে থেকে ১২ বলের মাথায় একই রাস্তা মাপেন আরেক সেট ব্যাটার স্কাইও। ৩৬ বলে তিনি করেন ৫৭ রান। স্কোরবোর্ডে তখন ১৫ ওভার ৪ বলে ৪ উইকেটে ১২৪ রান। পরে সেখান থেকে হার্দিক পান্ডিয়ার ২৩ এবং শেষে রবীন্দ্র জাদেজার ৯ বলে ১৭ রানের ক্যামিওতে ১৭১ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজিতে পৌঁছে যায় ভারত। ইংল্যান্ডের হয়ে ৩ ওভার বল করে ৩৭ রান দিয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন ক্রিস জর্ডান।
চলতি মাসের শুরুর দিন থেকে শুরু হওয়া বিশ্বকাপের নবম এই আসর বিদায়ের দুয়ারে। এর আগে প্রথম সেমিতে আফগানদের উড়িয়ে ফাইনালে উঠেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। তাদের বিপক্ষেই আগামী শনিবার শিরোপার লড়াইয়ে নামবে রোহিত শর্মার দল। কেনসিংটন ওভালে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৩০ মিনিটে।