টেস্ট ও ওয়ানডে সিরিজ জয়ের পর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতেও দাপট বাংলাদেশের। সিরিজের প্রথম ম্যাচেই স্বাগতিকরা গড়েছে চ্যালেঞ্জিং স্কোর। লিটন দাস, তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের ব্যাটে ঝড় জয়ের পুঁজি এনে দিয়েছে বাংলাদেশকে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সোমবার মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে বাংলাদেশ তুলেছে ২০ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২০০ রান। প্রতি ওভারে ১০। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ রানের স্কোর গড়ল টাইগাররা।
সময়টা এখন যেন লিটন দাসের। সিলেটে ওয়ানডে সিরিজে পেয়েছিলেন দুই সেঞ্চুরি। খেলেন দেশের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। সেই সাফল্যের রেশ ধরে রাখলেন টি-টোয়েন্টি সিরিজেও। একইসঙ্গে প্রতিপক্ষ হিসেবে জিম্বাবুয়েকে বেশ মনে ধরেছে তামিম ইকবালেরও। দু'জন উপহার দিলেন রেকর্ড গড়া ওপেনিং জুটি।
দেখে-শুনেই খেলছিলেন তামিম। কিন্তু ৪১ রানে এসে পথ হারান এই ওপেনার। ৩৩ বলের ইনিংসটি খেলতে গিয়ে অবশ্য রেকর্ডের সঙ্গী হলেন। ১০.২ ওভারে লিটনকে নিয়ে গড়েন ৯২ রানের জুটি। তামিম ও লিটন বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে গড়লেন সর্বোচ্চ রানের উদ্বোধনী জুটি। আগের জুটিও অবশ্য ছিল তামিম-লিটনেরই। ২০১৮ সালে কলম্বোয় ৫.৫ ওভারে ৭৪ রানের জুটি গড়েন তারা।
সিলেটে ওয়ানডে ক্রিকেটেরও সেরা ওপেনিং জুটির রেকর্ড গড়েন লিটন-তামিম। গড়েছেন দেশের হয়ে যে কোনো উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
ওয়ানডে সিরিজ যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই যেন শুরু করেছিলেন লিটন ও তামিম। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচে দারুণ লড়ে গেলেন এই দুই ওপেনার। তাদের ব্যাটেই উড়ন্ত সূচনা পায় বাংলাদেশ।
তামিম ফিরতেই পথ হারান লিটন। সিকান্দার রাজার বল ভুল লাইনে খেলে এলবিডব্লিউ। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দেওয়ার পর রিভিউ নেন। ট্র্যাকিংয়ে দেখা যায় বল আঘাত হানতো অফ স্টাম্পে। ৩৯ বলে তিন ছক্কা ও পাঁচ চারে ৫৯ রান তুলে ফেরেন লিটন।
এরপর ছোট্ট ঝড়ো ইনিংস খেলে আউট মুশফিকুর রহিম। তিনি করেন ৮ বলে ১৭। তারপর সৌম্য সরকার ৩২ বলে খেলেন ৬২ রানের ঝড়ো এক ইনিংস।
এর আগে অবশ্য সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে টস ভাগ্যটা সঙ্গে থাকেনি মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। সোমবার মিরপুরের শেরে বাংলায় শেষ বিকেলে টস জিতলেন জিম্বাবুয়ে অধিনায়ক শন উইলিয়ামস। অবশ্য উইকেটের কথা মাথায় রেখে টস জিতলে মাহমুদউল্লাহও নিতেন ফিল্ডিং।
টেস্টে ইনিংস ব্যবধানে জয়, ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশের তৃপ্তি নিয়েই এবার টি-টোয়েন্টির লড়াই। মিরপুরের শেরে বাংলায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটিকেই বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে নিচ্ছে বাংলাদেশ দল।
এমন লড়াইয়ে একাদশে ফিরলেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। পাকিস্তান সফরে না যাওয়া মুশফিক ছিলেন সর্বশেষ টি-টোয়েন্টিতে দলের বাইরে। তিনি ফিরলেন একাদশে। একইসঙ্গে চোট কাটিয়ে সাইফউদ্দিনও ফিরেছেন টি-টোয়েন্টিতে।
ভারত ও পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলা ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখকে রাখা হয়নি একাদশে।
এখন অব্দি বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হয়েছে ১১বার। যার মধ্যে ৭টিতে জিতেছে টাইগাররা। ৪টিতে জিম্বাবুয়ে। ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত এ ফরম্যাটে দুই দলের শেষবার দেখা গত বছরের সেপ্টেম্বরে। তখন দুটি ম্যাচেই জিতেছিল বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ২০০/৩ (তামিম ৪১, লিটন ৫৯, সৌম্য ৬২*, মুশফিক ১৭, মাহমুদউল্লাহ ১৪*; রাজা ১/৩১ ও এমপোফু ১/৫৮)।