'র্যাব সদরদফতর' প্রকল্পের কাজও জি কে শামীমের হাতে!
রাজধানীর নিকেতনে জি কে গ্রুপের কার্যালয় থেকে যুবলীগের নেতা জি কে শামীমকে বিপুল পরিমাণ টাকা ও স্থায়ী আমানত (এফডিআর) কাগজসহ আটক করেছে র্যাব।
র্যাবের দাবি, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে শামীমকে তার ৭ দেহরক্ষীসহ আটক করা হয়েছে। এ সময় তার কাছে থেকে ১ কোটি ৮০ লাখ নগদ টাকা, লাইসেন্সবিহীন অস্ত্র, মাদক, ও প্রায় ২০০ কোটি টাকার এফডিআর চেক উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রায় ৪ ঘণ্টা জি কে শামীমের নিকেতনের ডি ব্লকের ৫ নম্বর রোডের ১৪৪ নম্বর অফিস ঘিরে রেখে বিকেলে তাকে আটক দেখায় র্যাব। তাকে আটক ও সম্পদ উদ্ধারের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন র্যাব সদরদফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম ও র্যাবের মুখপাত্র সারোয়ার বিন কাশেম।
সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে র্যাব জানায়, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই জিকে শামীমের অফিসে অভিযান চালানো হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে বিপুল সংখ্যক টাকা ও স্থায়ী সম্পদ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন: যুবলীগ নেতা শামীমের অফিসে মাদক ও টাকার স্তূপ
এত টাকা বাসায় রাখা অপরাধ কিনা এমন প্রশ্নে র্যাব কর্মকর্তারা বলেন, 'শামীমের সম্পদ বৈধ কি অবৈধ সেটি আদালতে প্রমাণ হবে। সে যদি আদালতে সঠিক হিসাব দেখাতে পারে, তাহলে তার সম্পদ তারই থাকবে।'
এদিকে অভিযান চালানোর সময় শামীমের অফিস থেকে সরকারি প্রায় ১৭টি বড় বড় প্রকল্পের ঠিকাদারি কাগজপত্রের তালিকা পায় র্যাব। সেখানে দেখা যায়, স্বয়ং র্যাব সদরদফতরের প্রকল্পের ঠিকাদারের কাজও পেয়েছেন এই যুবলীগ নেতা।
র্যাব সূত্রে জানা যায়, র্যাব সদরদফতর, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল, পঙ্গু হাসপাতাল, সচিবালয়সহ ২৫০০ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজের একটি তালিকা রয়েছে।
জিকে প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারাও দাবি করছেন, জি কে বি অ্যান্ড কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডে এসব প্রকল্প পেয়েছেন এবং কাজ করছেন।
আরও পড়ুন: শামীমের অফিস থেকে যা উদ্ধার করল র্যাব
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটির একজন সিনিয়র ম্যানেজার বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, 'বর্তমানে আমাদের আনুমানিক ১০ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলছে। আমাদের অফিসে এত টাকাতো থাকবেই।'
এর আগে বিকেল ৪টায় অভিযান শেষে শামীমসহ ৮ জনকে আটক করার কথা জানায় র্যাব। এই এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম ‘শামীম ঠিকাদার’ নামে পরিচিত।
রাজধানীর সবুজবাগ, বাসাবো, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকায় শামীম ঠিকাদারি কাজ করে থাকেন। শুধু তাই নয় গণপূর্ত ভবনের বেশি ভাগ ঠিকাদারি কাজ করেন তিনি। বিএনপি-জামায়াত শাসনামলেও গণপূর্তে এই শামীমই ছিলেন ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণকারী ব্যক্তি। সেই জিকে শামীম এখন যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক।